হ-বাংলা নিউজ:
আজ অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা বিভিন্ন খাতের সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। পাশাপাশি, মধ্যমেয়াদে এবং দীর্ঘমেয়াদে সংস্কারের কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, সে ব্যাপারে সুপারিশও উত্থাপন করা হবে। ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল একথা জানান।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারও বক্তব্য রাখেন।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান হিসেবে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তিনি সংস্কার প্রতিবেদন নিয়ে খোঁজ নেন এবং এই প্রক্রিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি বৈঠকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংস্কার কমিশনগুলো আজ তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে এবং একই দিন ছয়টি কমিশনের প্রধানরা তাদের সুপারিশ এবং সংস্কারের ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে একটি সুপারিশনামা পেশ করবেন। এই প্রতিবেদন এবং সুপারিশগুলো রাজনৈতিক দল এবং জুলাই মাসে হওয়া গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর কাছে পাঠানো হবে। তাদের সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। আশা করা হচ্ছে, এই বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তারিখ নির্ধারণ করা হবে। ওই সভার সভাপতিত্ব করবেন ঐকমত্য কমিশনের প্রধান, ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস ৩ দিনের মাথায়, ১১ সেপ্টেম্বর, ৬টি খাত সংস্কারের জন্য সুনির্দিষ্ট কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারকে নিয়োগ করা হয়।
এছাড়া, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে সাবেক জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র সচিব সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনে সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজকে প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
১৫ জানুয়ারি, চারটি কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রদান করে। এরপর, কমিশন প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক আলী রীয়াজ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদনের পর, সরকার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে, শিক্ষার্থী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং সরকারের প্রতিনিধিদের নিয়ে ৩ থেকে ৭ দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সংস্কারের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে।
