২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পরবর্তী শুনানি ২৬ মে

হ-বাংলা নিউজ: ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মামলায় সব আসামিকে খালাস দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতির আবেদন) পরবর্তী শুনানি ২৬ মে নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ এই দিন ধার্য করেন। এদিন রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক।

পেছনের প্রেক্ষাপট

গত বছরের ১ ডিসেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলার রায় দেন, যা পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকাশ হয় ১৯ ডিসেম্বর। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে এবং ১৩ মার্চ চেম্বার জজ আদালত আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠান।

হামলার বিবরণ

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হয়। ওই হামলায় প্রাণে বাঁচেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তবে নিহত হন দলটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন দুটি মামলা হয়—একটি হত্যা মামলা ও অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে।

মামলার অগ্রগতি

২০০৮ সালের ১১ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রথম অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এতে ২২ জনকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালে আরও ৩০ জনকে যুক্ত করে মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ জনে।

এর মধ্যে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুফতি হান্নান ও শাহেদুল ইসলাম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড অন্য মামলায় কার্যকর হওয়ায় এই মামলায় বর্তমানে আসামির সংখ্যা ৪৯।

বিচারিক আদালতের রায়

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর দেওয়া বিচারিক আদালতের রায়ে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন, এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম:

  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর
  • বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু ও তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন
  • হুজি নেতা মুফতি হান্নান
  • এনএসআই ও সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা
  • হানিফ পরিবহনের মালিক ও বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হানিফ

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন:

  • বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান
  • সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী
  • হুজি সদস্যসহ আরও অনেকে

অন্য সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন:

  • পুলিশের সাবেক আইজি মো. আশরাফুল হুদা
  • খালেদা জিয়ার আত্মীয় লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক
  • ডিএমপি, সিআইডি ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক কর্মকর্তারা

তাদের বিরুদ্ধে দুই থেকে তিন বছর মেয়াদি দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়, পাশাপাশি আর্থিক জরিমানাও আরোপ করা হয়।

২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর এই মামলার রায় হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পাঠানো হয়। পরে কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন এবং গত বছরের ৩১ অক্টোবর থেকে আপিল শুনানি শুরু হয়।

হাইকোর্টের রায় ও বর্তমান অবস্থা

দীর্ঘ শুনানির পর গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ওই মামলায় দেওয়া বিচারিক আদালতের সাজাগুলো বাতিল করে সব আসামিকে খালাস দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল অনুমতির আবেদন জানায়, যার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৬ মে অনুষ্ঠিত হবে।


চাইলে আপনি এই প্রতিবেদনটি আরও সংক্ষিপ্ত বা সংবাদের ধরন অনুযায়ী উপস্থাপন করতে পারেন। আমি সাহায্য করতে প্রস্তুত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *