জুলাই চার্টার’ ঘোষণা করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার, মার্চে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু

হ-বাংলা নিউজ:সংস্কার ইস্যুতে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই চার্টার’ ঘোষণা করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মার্চ মাসের শুরুতেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা শুরু করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদনও এরই মধ্যে দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো জানিয়েছে, তারা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা শেষে মতামত জানাবে।

কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা জানিয়েছেন, তারা বর্তমানে এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করছেন এবং কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করার পর সংস্কার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করবেন।

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দ্রুত দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করবেন তারা। তার আশা, নির্ধারিত সময়ের আগেই কমিশন তাদের কাজ শেষ করতে পারবে।

কমিশন সূত্র জানায়, সংস্কার ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে একটি ফরম পাঠানো হবে। ওই ফরমে দলগুলো নিজেদের মতামত দেবে, কোন সংস্কার তারা এখনই চায় এবং কোন সংস্কার পরে বাস্তবায়ন করতে আগ্রহী।

আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দলগুলো ও জোটের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক শুরু করতে পারে বলে জানা গেছে।

সংবিধান, নির্বাচনি ব্যবস্থা, বিচারবিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং পুলিশ বিভাগের সংস্কারের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত প্রথম দফায় ছয়টি কমিশনের প্রধানদের নিয়েই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে।

এদিকে, সংস্কার বিষয়ক মতবিরোধে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী মধ্যে তীব্র পার্থক্য রয়েছে, যা দলগুলো প্রকাশ্যে জানিয়েছে।

বিএনপি জরুরি সংস্কার বাস্তবায়নসহ দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে। জামায়াতে ইসলামীর নেতারা “আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন” নীতির পক্ষে রয়েছেন এবং ইতোমধ্যেই তারা সরকারের কাছে এই প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে কয়েকটি দল প্রতিবেদনগুলোর পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনার জন্য এগুলোর ‘হার্ড কপি’ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, যা কমিশন ইতোমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছে এবং দলগুলো এগুলো পর্যালোচনা শুরু করেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, তারা প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর কমিশনের কাছে মতামত জানাবেন। যেগুলোর বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হবে এবং যেগুলোর বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, সেগুলোর বিষয়ে পরবর্তী নির্বাচনের পর সংসদে আলোচনা করা হবে।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, তারা প্রতিবেদনগুলোর কপি পেয়েছেন এবং বর্তমানে তা পর্যালোচনা করছেন। পরে কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে তারা নিজেদের প্রস্তাব জানাবেন।

জামায়াতসহ কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার নিয়ে তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করেছে, এবং তাদের অবস্থান অনুযায়ী সংস্কার বাস্তবায়ন কতটা জরুরি, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

এছাড়া, জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতো সংগঠনগুলিও “সংস্কার শেষ না করে নির্বাচন হলে রাজনীতি আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে” এই যুক্তি তুলে ধরছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *