হ-বাংলা নিউজ: তিসংঘ সম্প্রতি জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের উপর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এবং শেখ হাসিনার নৃশংসতা তুলে ধরেছে। এই ঘটনায় শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও কার্যত শেষ হয়ে গেছে, এমনটাই মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শফিকুল আলম লেখেন, “গত বছরের আগস্টে যখন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সিদ্ধান্ত নেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাকে জুলাই ও আগস্টের সহিংসতা নিরপেক্ষভাবে তদন্তের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে, তখন অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। কেউ কেউ মনে করেছিলেন জাতিসংঘের এই পদক্ষেপ অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ হবে এবং হয়তো সমঝোতামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে, তবে অধ্যাপক ইউনূস তার সিদ্ধান্তে অবিচল ছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “অধ্যাপক ইউনূস জানতেন যে, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ছাড়া এমন একটি তদন্ত সম্ভব নয়, যা সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং বিশ্বাসযোগ্য হবে। সবাই জানতো, কী ঘটেছিল, কিন্তু দেশীয় বর্ণনার উপর নির্ভর করলে চলত না, আন্তর্জাতিক সংস্থার তদন্ত প্রয়োজন ছিল।”
শফিকুল আলম জানান, জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনটি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে একেবারে শেষ করে দিয়েছে। “এটি শেখ হাসিনার ওপর শেষ পেরেক মরেছে,” বলেন তিনি। “অধ্যাপক ইউনূসের দূরদর্শিতার ফলে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন এখন শেখ হাসিনার রাজনীতির প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নষ্ট করেছে।”
শফিকুল আলম আরও বলেন, “যদি আওয়ামী লীগ এবং তাদের কর্মীরা, যারা জুলাই-আগস্টের সহিংসতার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন না, দলকে পুনরুজ্জীবিত করতে চান, তবে তাদের উচিত শেখ হাসিনার পরিবারকে প্রত্যাখ্যান করা এবং জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া।”
এদিকে, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগেও স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে, তবে শেখ হাসিনা ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে তুলনা করলে পার্থক্য পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে, যা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে পরিষ্কার হয়ে এসেছে। শফিকুল বলেন, “এরশাদ তার শাসনামলে দুর্নীতিবাজ হলেও, তার বিরুদ্ধে এমন তীব্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ছিল না, যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ সৌভাগ্যবান নয়, কারণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো তার শাসনামলে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনগুলিকে নথিভুক্ত করেছে। তার শাসনামলে ভোট কারচুপি, গুম, হত্যা, গণগ্রেপ্তার—এসব ঘটনা বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।”
এছাড়া, তিনি বলেন, “বিশ্বের কিছু শক্তিশালী দেশ ও সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানের কারণে শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক মহলে সুবিধা পেয়ে এসেছেন। কিন্তু জাতিসংঘের প্রতিবেদন এইসব প্রচেষ্টাকে ভেঙে দিয়েছে।”
ফেসবুক স্ট্যাটাসের শেষে তিনি লেখেন, “দুঃখিত, আপা! সব শেষ!!”
