ডিসিরা আন্দোলন ঠেকাতে পুলিশের বডি-ক্যামেরা ব্যবহারের প্রস্তাব, প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার দাবি

হ-বাংলা নিউজ: আন্দোলন ও সংগ্রাম ঠেকানোর দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যদের বডি-ক্যামেরা ব্যবহার করার প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। একই সঙ্গে, প্রাণঘাতী অস্ত্র ও ছররা গুলি ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলনে এই প্রস্তাবসহ সাড়ে তিন শতাধিক প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।

আজ নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত বছরের মতো এবারও সম্মেলনের মূল ভেন্যু হবে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন। সম্মেলন শেষ হবে আগামী মঙ্গলবার।

শনিবার বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ডিসি সম্মেলন-২০২৫ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। এ সময় তিনি এসব তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “গত বছর জেলা প্রশাসক সম্মেলনে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার কিছুটা কমেছে। কারণ, গত সরকারের অনেক উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বর্তমান সরকার বাস্তবায়নে আগ্রহী নয় এবং ব্যক্তি বিশেষের নামে নেওয়া প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন করা সরকারের পক্ষে সমীচীন মনে হচ্ছে না। গত বছর সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তের মাত্র ৪৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, এবারের সম্মেলনে ডিসিরা প্রস্তাব করেছেন, দায়িত্ব পালনের সময় আন্দোলন মোকাবেলায় পুলিশ সদস্যরা বডি-ক্যামেরা ব্যবহার করবে এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র, এমনকি ছররা গুলি ব্যবহার না করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডিসির অধীনে একটি বিশেষায়িত ফোর্স বা বাহিনী গঠনের প্রস্তাব এসেছে। এটি জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে। এছাড়া, মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য একটি বিধিমালা প্রণয়নেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ডিসিরা।”

এ বছর ডিসিরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ১২৫০টি প্রস্তাব পাঠিয়েছে এবং সেখান থেকে ৩৫৪টি প্রস্তাব বিভিন্ন কর্ম-অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গণি উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গত বছর ডিসি সম্মেলনে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি ৩৮১টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, এর মধ্যে ১৭৭টি বাস্তবায়িত হয়েছে এবং ২০৪টি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। তিনি জানান, এবারের সম্মেলনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে মোট ৩০টি কার্য-অধিবেশন এবং চারটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ অধিবেশনগুলোর মধ্যে থাকবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মুক্ত আলোচনা ও বিশেষ সভা, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সভা।

ড. শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, “এবারের সম্মেলন শুরু হবে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে। অধিবেশনে বর্তমানে মাঠের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে, আহত ও নিহতদের বিষয়ে কথা হবে। ডিসিরা সরাসরি আহত ও নিহতদের তালিকা তৈরি করেছেন, শহিদের দাফন করেছেন এবং তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সরকারি সহায়তা দিয়েছেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *