হ-বাংলা নিউজ:
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর রাষ্ট্রীয়ভাবে অত্যাচার ও নিপীড়ন চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করে আদালতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, “এটি ছিল রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, যা শেখ হাসিনার নির্দেশে আদালতের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল।”
এদিন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি চলছিল। শুনানির সময়, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল খালেদা জিয়ার ওপর অত্যাচারের কথা বলতে গিয়ে কাঁদেন। এ সময়, প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং আপিল বেঞ্চের বিচারপতিরা তার বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন। আদালত কক্ষে উপস্থিত অন্যান্য আইনজীবীরাও আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন এবং আদালত কক্ষে নীরবতা বিরাজ করে।
আবেগে ভেঙে পড়া ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, “খালেদা জিয়াকে যেভাবে সামাজিক, পারিবারিক এবং রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা হয়েছে, তা অমানবিক। এটি একটি রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ছিল।” তিনি আরও বলেন, “২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার শুনানি চলছিল বিকাল ৪টা পর্যন্ত, কিন্তু খালেদা জিয়া বিকাল ৬.৪৫-এ আদালত থেকে বের হন। এ ধরনের পরিস্থিতি এক ধরনের ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন মানুষের মৌলিক অধিকারকে সম্মান না দিয়ে, তাকে রাজনীতির ময়দান থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়ার বিচারক যখন তার সাথে কথা বলার সময় হাঁপিয়ে যেতেন, তখনও আদালত তাকে বিশ্রাম নিতে সুযোগ দেয়নি। এটাই ছিল রাষ্ট্রীয় অত্যাচারের একটি নিদর্শন।”
কায়সার কামাল বলেন, “যত বড় অপরাধী হোক না কেন, তাকে ডিফেন্স করার সুযোগ দেওয়া হয়, কিন্তু খালেদা জিয়ার সঙ্গে সুষ্ঠু বিচার হয়নি। তাকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে, পরে তা ১০ বছরে রূপান্তরিত করা হয়েছে।”
তিনি এই প্রসঙ্গে আরও বলেন, “আদালতে যখন খালেদা জিয়ার জন্য ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়, তখন বিচারকরা আমাদের শুনানি করতে দেননি। আমরা চেয়েছিলাম একদিন সময়, কিন্তু সেটা দেওয়া হয়নি। একতরফা রায় দিয়ে সাজা বাড়ানো হয়।”
এছাড়া, কায়সার কামাল মন্তব্য করেন, “সুপ্রিম কোর্টের আদালত খালেদা জিয়াকে ভিকটিম করার জন্য এগিয়ে চলেছিল। এমনকি দুদককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তারা কি খালেদা জিয়ার সাজায় সন্তুষ্ট ছিল কিনা।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের মানুষ যখন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তখন খালেদা জিয়াও অনেক দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হয়েছেন। তাঁর জীবন এবং রাজনৈতিক সংগ্রাম বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য ও জীবনের সাথে গভীরভাবে যুক্ত।”
এ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৪ জানুয়ারি নির্ধারিত হয়েছে।
