বিজয় দিবস নিয়ে মিজানুর রহমান আজহারীর ভাবনা: স্বাধীনতা ২.০ এবং আগামীর বাংলাদেশ

হ-বাংলা নিউজ: 

এবারের বিজয় দিবসকে অন্যরকম হিসেবে উল্লেখ করেছেন তরুণ আলেম এবং জনপ্রিয় ইসলামিক আলোচক মিজানুর রহমান আজহারী। তিনি ৭১ এর স্বাধীনতা এবং ২৪ সালের স্বাধীনতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, পাশাপাশি আগামীর বাংলাদেশ কীভাবে গড়ে তোলা হবে, তারও কিছু ধারণা দিয়েছেন।

১৬ ডিসেম্বর, সোমবার বিজয় দিবস উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি ৭১ এর স্বাধীনতা, জুলাই বিপ্লব ও আগামী দিনের বাংলাদেশ বিষয়ে তার চিন্তা শেয়ার করেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘এবারের বিজয় দিবসটি সত্যিই অন্যরকম। কারণ, জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি এখনো তাজা। আমরা স্বাধীনতা ২.০ এর স্বাদ নিয়ে বিজয় দিবস উদযাপন করছি। তবে আজকের এই দিনে দাঁড়িয়ে আমি গভীরভাবে ভাবতে চাই— জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত ভাই-বোনদের ত্যাগের যথাযথ মূল্য আমরা দিতে পারছি কি না?

একাত্তরে আমরা লড়াই করেছিলাম— জালিম শাসনের বিরুদ্ধে, অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই বিজয়ের কিছু সময় পরই আমরা দেখেছি আমাদের অর্জন কীভাবে লুট হয়ে গেল। দেশ চলে গেল পুঁজিপতিদের পকেটে, কালচারাল এলিটদের হাতে। এর ফলস্বরূপ আমরা পেলাম ৭৪ এর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। যার পরিণতি— আমরা আমাদের নিজ দেশেই কোণঠাসা হয়ে পড়লাম।

এই কালচারাল এলিটরা বিগত ৫০ বছরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নিজেদের ইচ্ছেমতো উপস্থাপন করেছে। যেখানে মুক্তিযুদ্ধে দেশের মুসলিম জনগণ অংশ নিয়েছিল, সেখানে মুসলিমদেরকেই মুক্তিযুদ্ধের প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দাড়ি-টুপিকে করা হয়েছে রাজাকারের প্রতীক। এই কালচারাল এলিটদের তীব্র মেরুকরণের ফলস্বরূপ আজকের বৈষম্য ও ফ্যাসিজম।

তাই বিজয়ের দিনে আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই— জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার মূল প্রতীক ছিল মুসলিম ভাতৃত্ববোধ। তাদের হৃদয়ে ছিল শহিদি আকাঙ্ক্ষা। মজলুম, শহিদ, আল্লাহর সাহায্য— এসব শব্দই আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছিল। একাত্তরেও এটি ছিল ঠিক একইভাবে।

বিজয়ের এই দিনটা উদযাপন করার পাশাপাশি আমাদের ভবিষ্যত কর্মপদ্ধতি নির্ধারণের দিন। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কারো ধর্মীয় মূল্যবোধকে দমন করা হবে না, কোনো ‘জঙ্গী’ নাটক সাজানো হবে না। এমন এক বাংলাদেশ, যেখানে রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের জন্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ছক আঁকা হবে না। যেখানে নিশ্চিত করা হবে সকল বিশ্বাসের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। আমাদের আগামীর বাংলাদেশ হবে জনতার বাংলাদেশ।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *