হ-বাংলা নিউজ:
বিকৃত ব্যালেন্স শিটের ভিত্তিতে খেলাপি ঋণ দেয়া ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে কোনো অর্থায়ন হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, বেক্সিমকো ও এস আলমের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যালেন্স শিট বর্তমানে ফাঁকা, অথচ ব্যাংকগুলো এই প্রতিষ্ঠানের ঋণ দিয়েছে। সুতরাং, এভাবে ঋণ দেওয়া কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শনিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরে অভ্যন্তরীণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফাওজুল কবির এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে ব্যাংকগুলো আগ্রহী নয়। এ জন্য সরকার নতুন নীতির মাধ্যমে সোলার স্থাপন এবং সঞ্চালন লাইনে যুক্ত হওয়ার ব্যবস্থা করবে।”

ফাওজুল কবির বলেন, সরকার এখন বিদ্যুৎ ক্রয়ের পুরনো নীতি থেকে বেরিয়ে আসবে এবং মার্চেন্ট বিদ্যুৎ নীতি গ্রহণ করবে। এতে বিনিয়োগকারীরা তাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রি করার জন্য গ্রাহক বাছাই করবেন, এবং সরকার আইপিপি (স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী) থেকে ১০-২০ শতাংশ বিদ্যুৎ কিনবে।
তিনি আরও জানান, সরকার এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে রেল, সড়কসহ অব্যবহৃত জমি ব্যবহার করবে এবং এর জন্য শিগগিরই নতুন নীতি প্রণয়ন করবে। তিনি বলেন, “এখন নবায়নযোগ্য শক্তি ছাড়া দেশের সামনে এগিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।”
এছাড়া, ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রদান বিষয়ে তিনি বলেন, সাধারণ ও প্রকৃত উদ্যোক্তারা বড় হোটেলে লাঞ্চ বা ডিনারে যেতে পারেন না, তাই তাদের জন্য ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি ব্যাংকগুলোর কাছে পরামর্শ দেন, যাতে তারা সম্পদ বিবেচনা করে ঋণ অনুমোদন করে।
তবে, তিনি জানালেন যে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের জন্য শুল্ক কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই, বরং স্থানীয় শিল্প গড়ে তোলার জন্য সরকার এই খাতে শুল্ক রাখবে।
অনুষ্ঠানে সিপিডির গবেষণা পরিলাচক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অর্থায়ন সহজ করতে হবে এবং বিদেশি বিনিয়োগের পথ সুগম করতে হবে।
সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চের চেয়ারপারসন গৌরাঙ্গ নন্দী বলেন, অর্থায়নের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন করা যেতে পারে এবং ব্যক্তিগত উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত বাড়তি বিদ্যুৎ সরকারের কাছে বিক্রি করার ব্যবস্থা করা উচিত।
ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা’র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন দ্য সিটি ব্যাংকের চিফ ইকোনমিস্ট মো. আশানুর রহমান, ক্লিনের চিফ এক্সিকিউটিভ হাসান মেহেদী প্রমুখ।
