পাচার করা টাকা ফেরানোর জন্য সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাংকের সহায়তা

হ-বাংলা নিউজ:  বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফেরানোর ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাংকের কারিগরি সহায়তা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে এবং এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। একইভাবে, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বিভিন্ন আলোচনা হয়েছে এবং তাদের সহযোগিতায় পাচারকৃত অর্থের অবস্থান ও প্রকৃতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। সরকার আন্তর্জাতিক মহলে পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কাছে কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ তুলে ধরবে। ইতোমধ্যে আইনি পদক্ষেপও শুরু হয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ করে আগের সরকারের আমলে দখল হওয়া ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এসব অর্থ কীভাবে ব্যাংক থেকে বের হয়ে গিয়েছিল, তা অনুসন্ধান করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন এই অর্থের গন্তব্য ও তার পরবর্তী অবস্থান জানার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তা করবে এবং পাচার হওয়া অর্থের whereabouts (অবস্থান) অনুসন্ধান করবে।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বলা হয়, পাচারকৃত অর্থের তথ্য উদঘাটন ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে সহায়তা করতে বিশ্বব্যাংক তাদের কৌশল প্রয়োগ করবে। এ ছাড়াও, যেসব ব্যাংক থেকে টাকা পাচার হয়েছে, সেগুলোর ওপর বিশেষভাবে নজর দেওয়া হবে। সরকারি খাতের জনতা ব্যাংক থেকেও ব্যাপক পরিমাণ টাকা পাচার হওয়ার বিষয়টি রয়েছে, যা অনুসন্ধান করা হবে।

এদিকে, পাচারকৃত টাকা ফেরানোর জন্য সরকারকে কারিগরি সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ও জাস্টিস বিভাগের একটি প্রতিনিধিদল রোববার ঢাকায় আসছে। প্রতিনিধি দলটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করবে। বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশকে কী ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারবে, বিশেষত পাচার হওয়া অর্থ কোথায় এবং কীভাবে রয়েছে, তা শনাক্ত করতে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য মার্কিন সরকারের সহযোগিতা কামনা করবে।

এদিকে, বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (এমইউএফআই) ইতোমধ্যে পাচার হওয়া অর্থ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা শনাক্ত করেছে। ওই অর্থ ফেরানোর জন্য আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। দেশের আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং মামলার রায় পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে আইনি ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে, যা দিয়ে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *