হ-বাংলা নিউজ: সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে চলমান রুলের শুনানিতে আদালত বলেছেন, এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় মামলা। তারা এ বিষয়ে এমন একটি রায় দিতে চান, যাতে কেউ ন্যায়বিচারের অভাব দেখতে না পারে। আদালত জানায়, “আমরা সেই রায় দিয়েই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যা আগামী ৫০ বছর পরও মানুষ মনে রাখবে। তখন তারা দেখতে পাবে রাষ্ট্রপক্ষ কীভাবে এই মামলায় ভূমিকা রেখেছিল।”
বৃহস্পতিবার, বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী পরিচালিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এই মন্তব্য করা হয়। শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদ উদ্দিন আদালতে বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে এমন বক্তব্য তুলে ধরবে যা দেশের জনগণের এবং রাষ্ট্রের কল্যাণে অবদান রাখবে।” এরপর আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য রোববার (১০ নভেম্বর) দিন ধার্য করেন।
এ মামলায় রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে শুনানি করছেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া, আর বিএনপির পক্ষে আছেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, বদরুদ্দোজা বাদল এবং অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতের পক্ষে শুনানি করছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এবং ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে আইনজীবী আব্দুর রউফ ও ইশরাত হাসান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদ উদ্দিন।
এর আগে, ৬ নভেম্বর বুধবার, হাইকোর্টে পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রুলের দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে আদালত বলেন, “এই মামলা কোনো একক পক্ষের নয়; এটি এখন পুরো বাংলাদেশের জনগণের মামলা।”
রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ড. শরিফ ভূঁইয়া। তিনি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে “একটি মোটিভেটেড অ্যামেন্ডমেন্ট” হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং দাবি করেন, “এই সংশোধনীর মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশব্যাপী সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ঠেকিয়ে একই সরকার বারবার ক্ষমতায় থাকাকে নিশ্চিত করা।”
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়। এ সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। আরও, নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বৃদ্ধি করে ৫০ করা হয়।
