ইসরাইলের পেজার বিস্ফোরণ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে

হ-বাংলা নিউজ: ইসরাইলের সাম্প্রতিক পেজার বিস্ফোরণ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে। দক্ষিণ লেবাননে মোসাদের পরিকল্পনায় মঙ্গলবার শত শত পেজার বিস্ফোরিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, যা ইসরাইলের অর্থনৈতিক সহায়তা এবং অস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রধান, জানাচ্ছে যে লেবাননের ঘটনায় তাদের আগেভাগেই অবহিত করেনি ইসরাইল। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, অভিযান শুরু হওয়ার আগে ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রকে কিছু তথ্য জানিয়েছিল, যদিও বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেনি।

৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি তীব্র হয়ে উঠেছে। ইসরাইলের পাল্টা হামলা অব্যাহত রয়েছে, যদিও বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরতির দাবি উঠছে। এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

প্রশ্ন উঠছে, ইসরাইলের লেবাননে হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন কি মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমানোর জন্য? ৭ অক্টোবরের পর থেকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দশবার মধ্যপ্রাচ্য সফর করেছেন।

সর্বশেষ বুধবার কায়রো সফরে গিয়ে তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা নিয়ে কথা বলেন। এর মধ্যেই লেবাননে পেজার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ইসরাইল। মার্কিন প্রশাসন যদি ইসরাইলের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত থাকে, তবে এই ধরনের সামরিক অভিযানের ব্যাপারে গোপন থাকার প্রশ্ন উঠছে।

হিজবুল্লাহ পেজার বিস্ফোরণের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করে বলেছে, “এই অপরাধমূলক আগ্রাসনের জন্য তারা ন্যায়সঙ্গত শাস্তি পাবে।” ফিলিস্তিনি আন্দোলন হামাসও বলেছে, এটি ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি বাধার পরিকল্পনা এবং এর ফলে ইসরাইলের ব্যর্থতা নিশ্চিত হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাসের পক্ষ থেকে সমর্থন পেয়েছে। তবে ইসরাইলের অটল অবস্থানের কারণে হামাস বলেছে, তারা দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। গাজা যুদ্ধ সমাপ্তির জন্য সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান চাইছে।

সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান প্রিন্স তুর্কি আল-ফয়সাল বলছেন, যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে রাজি নয়।

এছাড়া, মার্কিন নীতির প্রতি সমালোচনা করছেন গ্রিন পার্টির প্রার্থী ড. জিল স্টেইন। তিনি বলেন, গাজা যুদ্ধ ইসরাইলের নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহযোগিতা বন্ধ করলে যুদ্ধ দ্রুত থামতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বলছেন, তাদের সমর্থন বন্ধ করতে হবে।

সব মিলিয়ে, গাজায় যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে, যদি যুক্তরাষ্ট্র সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *