শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ আব্দুল মজিদ, পরিবার আর্থিক সহায়তার অপেক্ষায়

হ-বাংলা নিউজ : দেশজুড়ে যখন শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে, তখন ২২ বছরের তরুণ আব্দুল মজিদ ঘরে বসে থাকতে পারেননি। দেশের মুক্তির সংগ্রামে অংশ নিতে তিনি রাস্তায় নেমে আসেন এবং ছাত্র-জনতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

৪ আগস্ট বগুড়ার শেরপুর শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে যোগ দেন আব্দুল মজিদ। মিছিলটি শেরপুর থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ থানা ভবনের ভেতর থেকে শটগানের গুলি ছোড়ে। এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে যান আব্দুল মজিদ। পুলিশ ফের গুলি ছুড়লে আব্দুল মজিদ কোমর থেকে পিঠ পর্যন্ত গুরুতর আহত হন।

আব্দুল মজিদকে প্রথমে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় এবং পরে বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আব্দুল মজিদ বগুড়ার ধুনট উপজেলার বিশ্বহরিগাছা গ্রামের মোহাম্মদ সলিমুদ্দিনের ছেলে।

বাবা মারা যাওয়ার পর পক্ষাঘাতগ্রস্ত মাকে নিয়ে ছোটবেলায় দুই ভাই বগুড়ার শেরপুরে কাজের সন্ধানে আসেন। পৌর শহরের খেজুরতলায় একটি টিনশেড বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তারা এবং মজুরি ভিত্তিক লেদমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাতেন।

আব্দুল মজিদের বড় ভাই রাকিব শেখ জানান, শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে করে তার শরীরে অন্তত ৩০০টি ছররা গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়। ৪ থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসা চলাকালে চিকিৎসক সাতটি ছররা গুলি বের করেন। ৭ আগস্ট বাড়ি ফেরার পর মজিদ আবারও যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন।

২২ আগস্ট মজিদকে বগুড়ার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে তার শরীরে আরও সাতটি গুলি অপসারণ করা হয়। বর্তমানে মজিদকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। গরিব পরিবারের সন্তান হওয়ায় অর্থের অভাবে তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পরিবারের সদস্যরা সকলের কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন। রাকিব শেখ জানান, সরকারিভাবে সহায়তা না পেলে তার ভাইকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *