বিসিবিতে নেতৃত্বের পরিবর্তনের পর তামিম ইকবালের বোর্ড পরিচালকের সম্ভাবনা

হ-বাংলা নিউজ: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সম্প্রতি নেতৃত্বের পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগের পর বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সাবেক ক্রিকেটার ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ। নতুন বোর্ড পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব শুরু করেছেন খ্যাতনামা ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম।

নেতৃত্ব পরিবর্তনের পর, তামিম ইকবাল বিসিবিতে বেশ কয়েকবার উপস্থিত হয়েছেন। পাপনের সময় তার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, কিন্তু নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে তামিমের সুসম্পর্ক রয়েছে। তামিমের উপস্থিতি এবং ফারুক আহমেদের সাথে তার বৈঠক, ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে মিরপুরের মাঠ ঘুরিয়ে দেখানোর বিষয়গুলো তামিমের বোর্ড পরিচালকের আলোচনাকে উসকে দিয়েছে।

তবে, তামিমের বোর্ড পরিচালক হওয়ার পথ এখনও বেশ লম্বা। বোর্ড পরিচালকের পদে বসার জন্য তাকে বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা পূরণ করতে হবে। প্রথমত, বর্তমান শূন্য পরিচালকের পদগুলো পূরণ করা হবে কিনা, তা বোর্ডের সিদ্ধান্তে নির্ভর করছে। নাইমুর রহমান দুর্জয় ও খালেদ মাহমুদ সুজন পদত্যাগ করায় তাদের পদ শূন্য হয়েছে। এ ছাড়া, চলতি বোর্ডের মেয়াদ আর এক বছর। এই সময়সীমার মধ্যে উপনির্বাচন হবে কিনা, সেটি একটি বড় প্রশ্ন।

বোর্ড উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য, তামিমকে প্রথমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলতে হবে এবং কাউন্সিলর হতে হবে। ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কাউন্সিলরদের মেয়াদও চার বছর এবং তাদের পরিবর্তন বিদেশে স্থায়ী হওয়া, মৃত্যু বা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ ছাড়া সম্ভব নয়।

বর্তমানে তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সক্রিয় এবং জাতীয় দলে ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তার কাউন্সিলর হওয়া স্বাভাবিক নয়। কাউন্সিলর হতে হলে তাকে প্রথমে কাউন্সিলর পদে বসতে হবে এবং তারপর নির্বাচনে প্রার্থী হতে হবে। যে ক্যাটাগরিতে উপনির্বাচন হবে, সেই ক্যাটাগরির কাউন্সিলররাই কেবল প্রার্থী হতে পারবেন।

খালেদ মাহমুদ সুজন ‘সি’ ক্যাটাগরির পরিচালক ছিলেন। তার পদত্যাগের ফলে এই পদ শূন্য হয়েছে। এই ক্যাটাগরিতে বিশ্ববিদ্যালয়, বিকেএসপি, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও বিসিবি মনোনীত সাবেক ক্রিকেটার এবং বিসিবি সভাপতির মনোনয়নে পাঁচজন সাবেক অধিনায়ক থাকে। তামিম কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি না করায় এই ক্যাটাগরি থেকে কাউন্সিলরশিপ পাবেন না।

তবে, সাবেক জাতীয় খেলোয়াড় এবং এনএসসির পাঁচ কাউন্সিলর থেকে তামিমের কাউন্সিলর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এই দুই ক্যাটাগরির কাউন্সিলরদের মধ্যে কেউ পদত্যাগ করেন, তাহলে তামিম সেখানে মনোনীত হতে পারেন। ‘সি’ ক্যাটাগরির শূন্য পদে নির্বাচন হলে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলর দেবব্রত পালের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

অন্যদিকে, নাইমুর রহমান দুর্জয়ের পদত্যাগের ফলে ঢাকা বিভাগে পরিচালক পদ শূন্য হয়েছে। এছাড়া জেলা-বিভাগীয় ও ক্লাব ক্যাটাগরিতে আরও পদ শূন্য হতে পারে। তামিমের নিজ বিভাগ চট্টগ্রামে বিসিবির বিভাগীয় পরিচালক আ জ ম নাসির বর্তমানে নিষ্ক্রিয়, এবং তিনি পদত্যাগ করলে তামিম সেখানে কাউন্সিলর হতে পারেন।

এছাড়া, ক্লাব ক্যাটাগরিতে কাউন্সিলর হয়ে তামিম পরিচালক নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন, তবে এই ক্যাটাগরির কোনো পদ এখনো শূন্য হয়নি। দুই-একটি পরিচালক সভার পর শূন্যতা তৈরি হতে পারে, যা তামিমের জন্য সুবিধাজনক হবে।

এনএসসি মনোনীত পরিচালকদের মাধ্যমে তামিমের বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে, নির্বাচনী প্রক্রিয়া ছাড়াও কাউন্সিলর হতে হবে এবং বিদ্যমান কাউন্সিলরদের মধ্যেও কাউকে পদত্যাগ করাতে হবে। তামিম কাউন্সিলর হলে, পরবর্তীতে নির্বাচন করার অধিকার পাবেন। এসব পরিস্থিতি সমাধান হলেই তামিম ইকবাল বোর্ড পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *