এক্সিম ব্যাংককে ১ হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ প্রদান করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

হ-বাংলা নিউজ: বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংককে ১ হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ দিয়েছে। এই ঋণ সাড়ে ১০ শতাংশ সুদে এবং ৯০ দিনের জন্য প্রদান করা হয়েছে। প্রচলিত পদ্ধতিতে টাকা ধার নেওয়ার জন্য এক্সিম ব্যাংকের কাছে যথাযথ বন্ড না থাকায়, ডিমান্ড প্রমিসরি (ডিপি) নোটের বিপরীতে এই ঋণ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নতুন করে অর্থ মুদ্রণ করতে হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৩ সেপ্টেম্বর এই ঋণ প্রদান করে।

এই ঋণের শর্ত অনুযায়ী, অর্থ শুধু রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য এবং শ্রমিকদের মজুরি ও বেতন–ভাতা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যাবে। নগদে অর্থ প্রদান করা যাবে না; বরং ব্যাংক হিসাব বা মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাবের মাধ্যমে টাকা বিতরণ করতে হবে। এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের গ্রাহক প্রায় ৩০০ পোশাক প্রতিষ্ঠান এবং আরও ৩০০ পোশাক-সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বেতনের জন্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন, তাই বিশেষ ব্যবস্থায় ঋণ নিতে হয়েছে।’

৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর ব্যাংকিং খাত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এক্সিম ব্যাংকসহ ১২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মজুমদার দীর্ঘদিন এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান ছিলেন।

এক্সিম ব্যাংক শরিয়াহ নীতিমালা অনুসারে পরিচালিত হয়, যা সাধারণত সুদভিত্তিক ঋণ গ্রহণের অনুমতি দেয় না। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘লেন্ডার অব দ্য লাস্ট রিসোর্ট’ হিসেবে সুদভিত্তিক বিশেষ ঋণ প্রদান করতে পারে। এ ঋণে স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) সুদহার প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্ডার অনুযায়ী, ৯০ দিনের মেয়াদে এই ঋণ প্রদান করা হয়। ব্যাংকিং পরিভাষায় এটি ওভারনাইট ঋণসুবিধা হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

নতুন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন এবং এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক এখনো তারল্যসংকটে রয়েছে। সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এসব ব্যাংকের ঋণাত্মক চলতি হিসাব সত্ত্বেও লেনদেন অব্যাহত রাখার সুযোগ দিয়েছিলেন। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংক সেই বিশেষ সুবিধা এখন বন্ধ করে দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *