হ-বাংলা নিউজ: নিউ ইয়র্ক ষ্টেটের গভর্নর ক্যাথি হোকুল শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে। তার মতে, এই প্রযুক্তি শিশুদের জন্য ক্ষতিকর এবং এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করছে। গভর্নর গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে স্মার্টফোনের পরিবর্তে সাধারণ ‘ডাম্প’ ফোন ব্যবহারের প্রস্তাব করেছেন। এই ধরনের ফোনগুলোতে টেক্সট মেসেজ পাঠানো সম্ভব, তবে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই।
গভর্নর হোকুল নিজেকে ‘প্রথম মম গভর্নর’ হিসেবে দাবি করেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, কোম্পানিগুলো মুনাফার জন্য শিশুদের টার্গেট করে সামাজিক মিডিয়া অ্যালগোরিদম তৈরি করছে, যা শিশুদের আসক্তি বৃদ্ধি করছে। এই কারণেই তিনি স্মার্টফোন নিষিদ্ধ করার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন।
মর্নিং জো অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমাদের বাচ্চাদের একটি অন্ধকার জগতে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।” তিনি আরো যোগ করেন, “আমাদের শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করে আর্থিক লাভ করা বন্ধ করুন।”
নতুন বছরের জানুয়ারিতে রাজ্য আইন পরিষদের অধিবেশনে তিনি স্মার্টফোন নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিল প্রস্তাব করার পরিকল্পনা করছেন। তবে, স্মার্টফোনের অভাবে শিশুদের হোমওয়ার্ক করার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি, যা অনেক শিশু বর্তমানে স্মার্টফোনের মাধ্যমে করে থাকে। এছাড়া, নিরাপত্তার জন্য যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করে তাদের বিষয়ে কোনোকিছু বলা হয়নি। বয়স্ক ছাত্রদের ক্যাম্পাসে স্মার্টফোন আনার অনুমতি দেয়া হলেও তা ব্যবহার করা যাবে কিনা সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
হোকুলের মুখপাত্রের কাছে মন্তব্য চাওয়া হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। তবে, অনেক অভিভাবক ইতোমধ্যেই তার প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছেন।
অ্যাটসুকো ডেসাদিয়া নামে এক মা বলেছেন, তিনি তার দুই শিশুর স্মার্টফোন ব্যবহারের সীমিতকরণের জন্য প্রস্তাবিত বিলের পক্ষে। তিনি জানান, “স্ন্যাপচ্যাট ও টিকটক নিষিদ্ধ করা উচিত। স্কুলে সেল ফোন নিষিদ্ধ করা হলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আরো মনোযোগী হতে পারবে।”
তবে, অনেক শিক্ষার্থী হোকুলের নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান। ১৪ বছর বয়সী ডারলিন মেনদেজ বলেন, কিশোররা সব সময়ই কোনো না কোনো উপায় খুঁজে নেবে। “স্মার্টফোনের সুবিধা ও অসুবিধা দুটোই আছে। কখনও কখনও আমরা অনেক বেশি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করি, যা সমস্যা সৃষ্টি করে। কিন্তু অনেক স্কুলের কাজের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ।”
আরেক ছাত্র হাইসেল আজসিভিন্যাক (১৭) জানায়, “বেশ কিছু সময় স্কুলের কম্পিউটারে ইন্টারনেট কাজ করে না। তখন আমরা স্মার্টফোন ব্যবহার করে কাজ করি, যা আমাদের অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে সহজ হয়।”
এদিকে, প্রস্তাবিত ‘দি স্টপ অ্যাডিকটিভ ফিডস এক্সপ্লোইটেশন ফর কিডস’ নামের বিলটি এখন আইনপ্রণেতাদের বিবেচনাধীন। এই বিলে সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা রয়েছে।
