বেইজিংয়ে শুরু হলো চীন–আফ্রিকা সম্মেলন, সি চিন পিংয়ের আমন্ত্রণে অংশগ্রহণ আফ্রিকার ২৫টি দেশের

হ-বাংলা নিউজ: চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের আমন্ত্রণে বেইজিংয়ে ২৫টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান জমায়েত হয়েছেন। এই সম্মেলনের মাধ্যমে চীন আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে অবকাঠামো, জ্বালানি ও শিক্ষা খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। বুধবার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে সম্মেলনের উদ্বোধন নৈশভোজের মাধ্যমে শুরু হয়। বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সি চিন পিং বক্তৃতা করবেন।

২০২০ সাল থেকে প্রতি তিন বছর পরপর আয়োজিত এই সম্মেলন গত কয়েক বছরের মধ্যে বেইজিংয়ে সবচেয়ে বড়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মেলনকে ‘চীন–আফ্রিকা বৃহৎ পরিবারের পুনর্মিলন’ হিসেবে অভিহিত করেছে। চীন আফ্রিকার প্রধান বাণিজ্য অংশীদার এবং বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীন আফ্রিকার খনিজ সম্পদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঋণ ও বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রভাব বাড়াতে চায়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চীন আফ্রিকার দেশগুলোকে শত শত কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। তবে, বিতর্ক উঠেছে যে, এই ঋণ আফ্রিকার দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক সুবিধার জন্য চীন ব্যবহার করছে। সম্মেলনে আফ্রিকার অন্তত ৫৩টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন, এবং প্রতিটি দেশের মন্ত্রিপর্যায়ের প্রতিনিধিরাও যোগ দিয়েছেন।

চীনা সংবাদমাধ্যম সি চিন পিংকে আফ্রিকার ‘প্রকৃত বন্ধু’ হিসেবে তুলে ধরছে এবং বলেছেন, তাঁর নেতৃত্বে আফ্রিকার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। গতকাল পর্যন্ত, সি চিন পিং আফ্রিকার এক ডজনের বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং এসব বৈঠকে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের গবেষক জানা ডি ক্লুভার মনে করেন, এই সম্মেলন চীনের আন্তর্জাতিক প্রভাব বৃদ্ধির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আফ্রিকার দেশগুলোর ভোট জাতিসংঘে গুরুত্বপূর্ণ, তাই তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

ওয়াশিংটনভিত্তিক কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের আফ্রিকাবিষয়ক প্রধান জয়নব ওসমান বলছেন, সম্মেলনের অন্যতম লক্ষ্য হলো আফ্রিকার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা। তিনি বলেন, ‘ভূরাজনৈতিক লক্ষ্যই এর মূল চালিকা শক্তি।’

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আফ্রিকার নেতারা এই সম্মেলন থেকে নতুন ঋণ ছাড়াও বিদ্যমান ঋণের শর্ত শিথিল করার অনুরোধ জানাতে পারেন। চ্যাথাম হাউসের আফ্রিকাবিষয়ক প্রধান অ্যালেক্স ভাইনসের মতে, ‘আফ্রিকার নেতারা শুধু নতুন ঋণের আবেদন করবেন না, বরং বিদ্যমান ঋণের শর্ত শিথিল করারও আহ্বান জানাবেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *