হ-বাংলা নিউজ: গত সপ্তাহে ফ্রান্স কর্তৃক আটক হওয়া বার্তা আদান–প্রদান অ্যাপ টেলিগ্রামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পাভেল দুরভের গ্রেপ্তার নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল সরাসরি অভিযোগ নিয়ে টেলিগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করা, কিন্তু তারা গ্রেপ্তারের পথ বেছে নিয়েছে।
গত মাসে ফ্রান্সে গিয়ে আটক হওয়ার পর প্রথমবারের মতো আজ শুক্রবার টেলিগ্রাম চ্যানেলে মন্তব্য করেন পাভেল দুরভ। তিনি বলেন, তাঁর অ্যাপটির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সম্পূর্ণ ভুল। দুরভ তাঁর পোস্টে দাবি করেন যে, টেলিগ্রামকে ‘দুর্বৃত্তদের স্বর্গরাজ্য’ বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
রুশ বংশোদ্ভূত ধনকুবের পাভেল দুরভ বলেন, টেলিগ্রাম অ্যাপের বিষয়ে তদন্তের বিষয়টি তাঁর কাছে বিস্ময়কর মনে হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষের জন্য বিশেষ হটলাইন তৈরি করে দিয়েছিলেন যাতে তারা চাইলে যেকোনো সময় টেলিগ্রামের ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন।
দুরভ বলেন, ‘যদি কোনো দেশ ইন্টারনেট পরিষেবা নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়, তবে প্রতিষ্ঠিত নিয়ম অনুযায়ী পরিষেবাটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রাক-স্মার্টফোন যুগের আইন ব্যবহার করে একজন সিইওকে প্ল্যাটফর্মের তৃতীয় পক্ষের অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা বিভ্রান্তিকর পদক্ষেপ।’
তিনি আরও জানান, টেলিগ্রাম অ্যাপটি নিখুঁত নয়, তবে তিনি এটি কোনো উদ্দেশ্যমূলক প্রতারণার সাথে যুক্ত করেননি। দুরভ বলেন, ‘কিছু গণমাধ্যমে লেখা হচ্ছে টেলিগ্রাম দুর্বৃত্তদের স্বর্গরাজ্য, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা প্রতিদিন লাখ লাখ ক্ষতিকর পোস্ট ও চ্যানেল সরিয়ে দিচ্ছি।’
দুরভের রাশিয়া ও ফ্রান্সের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। তাঁকে গত ২৫ আগস্ট উত্তর প্যারিসের একটি বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে অবৈধ লেনদেন, মাদক পাচার, জালিয়াতি এবং শিশু যৌন নির্যাতনের ছবি ছড়ানো।
ফরাসি বিচার বিভাগ টেলিগ্রাম অ্যাপে অপরাধমূলক কার্যকলাপের অনুমতি দেওয়ার অভিযোগে দুরভকে অভিযুক্ত করেছে। তবে, ৫০ লাখ ইউরো জামিনে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যার শর্ত হচ্ছে দুই সপ্তাহে একবার থানায় হাজিরা দিতে হবে এবং ফ্রান্স ত্যাগ করতে পারবেন না।
টেলিগ্রাম অ্যাপের ব্যবহারকারী সংখ্যা ১০০ কোটিরও বেশি। দুরভের আকস্মিক গ্রেপ্তার অ্যাপটিতে দুর্বৃত্তদের কার্যকলাপের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে এবং বাকস্বাধীনতা ও সরকারি সেন্সরশিপ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
