ফিলিস্তিন ইসরাইল সংকট, কোন পথে সমাধান?

হলিউড বাংলা নিউজঃ জীবন্ত আগ্নেয়গিরি সাময়িকভাবে যত শান্তই থাকুক সময়ের পরিক্রমায় তা উদগিরিত হবেই। কারণ ভিতরে দগদগে আগুন রেখে বাহিরের কোন আবরণ দিয়েই তার উদগিরন আটকিয়ে রাখা যাবে না। যেটি বিগত ৫৬ বছর যাবত ইসরাইল ও তার মিত্রগণ করার ব্যর্থ চেষ্ঠা করে আসছে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরন এবার হামাসের এই আক্রমন।আর তাতেই তথা কথিত বিশ্ব বিবেক নাড়া দিয়ে উঠেছে। শুরু হয়েছে হম্বিতম্বি। হামাসকে সন্ত্রাসী বলে গালাগাল তো মামুলি ব্যাপার। ওরা নিষ্ঠুর, ওরা জঘন্য, কি করে পারল এই ন্যাক্কাড়জনক হামলা চালাতে? আরো কত কি! কিন্তু বিশ্ব মোড়ল মানবতার ফেড়িওয়ালাগন বিগত ছাপ্পান্ন বছর যাবত আন্তর্জাতিক সকল আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইসরাইল কর্তৃক দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভুখন্ডে যে অমানবিক অত্যাচার অবিচার, পাখির মত মানুষ হত্যা (নারী ও শিশুসহ), করে আসছে তার কোন স্থায়ী সমাধানে এগিয়ে আসেনি। হামস যদি সন্ত্রাসী হয় তাহলে ত্রিশ বছর আগে যখন হামাসের অস্তিত্ব ছিলা না তখন কি হয়েছিল? ফিলিস্তন লিবারেশন অরগানাইজেশন (পিএলও) নেতা ইয়াছির আরাফাত প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার। কিন্তু ফলাফল আমাদের সবার জানা। ইসরাইল নিয়ন্ত্রিত পশ্চিম তীর এবং গাজাকে দুইশত পঞ্চাশটি ভাগে ভাগ করে পাঁচশত ত্রিশটি মিলিটারি চেকপোষ্ট বসিয়ে রাখা হয়েছে যার মোকাবেলা করছেন সাধারণ মানুষ প্রতি নিয়ত, প্রতি মুহুর্তে। সাড়ে পাঁচ হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিকে বিনা বিচারে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়েছে ইসরাইলের অন্ধকার কারা প্রকোষ্ঠে। নানা অজুহাতে ইসরাইলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনে সাড়াশি আক্রমন চালিয়েছে অসংখ্যবার। যার মোধ্য দীর্ঘতম ছিল টানা একপঞ্চাশ দিন। সেই ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনের সাথে ঘটে যাওয়া অগণিত অন্যায় অবিচারের বিচারিক মাপকাঠি যদি হামাসের এই আক্রমণকে দিয়ে ইসরাইল ও তার মিত্ররা বিচার করতে চায় এবং হামাসকে সন্ত্রাসী তকমা লাগিয়ে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করার নামে সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ অব্যাহত রাখে তাহলে অদুর ভবিষ্যতে হামাসের চালানো এবারের হামালার চেয়ে আরো ভয়াবহ হামলার জন্য ইসরাইলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ নিস্পেষিত মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিরা বিগত ৫৬ বছরে এত দমন পীড়নের মুখে যেহেতু দমে যায় নি, তাই আগামী দিনেও তাদের দমে যাওয়ার কোন সঙ্গত কারণ আপাতত দৃশ্যমান নাই। ফিলিস্তিন ইসরাইল সংকটের একমাত্র স্থায়ী সমাধান নিহিত আছে কেবল ফিলিস্তিনের ন্যায্য অধিকার তথা স্বাধীন “ফিলিস্তিন রাষ্ট্র” প্রতিষ্ঠার মোধ্যেই। এর অন্যথায় হলে এই সংকট আরো গভীর এবং দীর্ঘতর হবে তাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নাই। 

খায়রুজ্জামান মামুন, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *