সাত হাজার কর্মী ছাঁটাই শুরু করছে ওয়াল্ট ডিজনি

আর্থিক ক্ষতি সামলাতে গত মাসে (ফেব্রুয়ারি) সাত হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক গণমাধ্যম ও বিনোদন প্রতিষ্ঠান ওয়াল্ট ডিজনি। সেই ছাঁটাই প্রক্রিয়া তারা সোমবার শুরু করেছে। খবর রয়টার্সের

মূলত আনুষঙ্গিক খরচ কমানো ও মুনাফা বাড়ানোর জন্য কর্মী ছাঁটাই করছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। পার্ক, স্ট্রিমিং পরিষেবা, টিভি নেটওয়ার্ক ও ফিল্মসহ বেশ কয়েকটি বিভাগ রয়েছে ডিজনির। এর মধ্যে ডিজনি এন্টারটেইনমেন্ট, ডিজনি পার্ক, পণ্য ও করপোরেট বিভাগে কর্মী ছাঁটাই করা হবে।ডিজনির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বব ইগার কর্মীদের কাছে পাঠানো এক ই-মেইলে ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ই–মেইলে বব ইগার বলেন, প্রথম দফায় যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের আগামী চার দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জানানো হবে। আগামী এপ্রিলে দ্বিতীয় দফায় কর্মী ছাঁটাই হবে। সে সময় একসঙ্গে কয়েক হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হবে। আর গ্রীষ্মের শুরুতে শেষ দফায় কর্মী ছাঁটাই করা হবে।গত বছরের ত্রৈমাসিক তথা জুলাই–সেপ্টেম্বরে স্ট্রিমিং ব্যবসায়ে প্রায় ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার লোকসান হয় ওয়াল্ট ডিজনির। এরপর ডিজনির তৎকালীন সিইও বব চ্যাপেককে বরখাস্ত করে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। তখন নতুন সিইও হিসেবে দায়িত্ব পান বব ইগার। দায়িত্ব নিয়েই তিনি কোম্পানির খরচ কমিয়ে মুনাফা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেন।

খরচ কমাতে ডিজনির বেশ কিছু বিভাগের কার্যক্রম কমিয়ে আনেন বব ইগার। একই সঙ্গে এসব বিভাগ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের উদ্যোগ নেন তিনি। এর মাধ্যমে আগামী কয়েক বছরে ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে বলে জানান ডিজনির বব ইগার।ওয়াল্ট ডিজনির সিইও বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করা প্রত্যেক কর্মীর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। কিন্তু বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা ও খরচ—দুটোই আগের চেয়ে অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমাদের কর্মী ছাঁটাইয়ের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’২০২২ সালের শুরুর দিকে বিশ্বের জনপ্রিয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স লোকসানে পড়ে। গত এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো এমন পরিস্থিতির মুখে পড়ে নেটফ্লিক্স। এই খবর প্রকাশ হলে অন্যান্য স্ট্রিমিং কোম্পানিগুলো সতর্ক হয়ে যায়। সেই ধারাবাহিকতায় ওয়াল্ট ডিজনিসহ বিভিন্ন কোম্পানি খরচের লাগাম টেনে ধরতে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সারা বিশ্বের শ্রমবাজার এখন অস্থিতিশীল। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো মাঝেমধ্যেই কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিচ্ছে। ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত গুগল, মেটা, টুইটারসহ বেশ কিছু বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অনেক কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে। এর মধ্য দিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বে একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রবণতা শুরু হয়। সেই ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *