হ-বাংলা নিউজ: গাজীপুরের শ্রীপুরে পল্লী চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন (৭৪) খুন হয়েছেন। রবিবার (৪ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় নিজ চেম্বারে বসে থাকা অবস্থায় তিনি ছুরিকাঘাতে খুন হন। পুলিশ জানিয়েছে, দুই যুবক তার চেম্বারে প্রবেশ করে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত গিয়াস উদ্দিন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশ পল্লী চিকিৎসক সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। স্থানীয়ভাবে তিনি “ডাক্তার গিয়াস” নামে পরিচিত ছিলেন।
সন্দেহভাজন পরিচয় ও তদন্ত অগ্রগতি
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার রাত ৯টার দিকে দুই যুবক মোটরসাইকেলে করে এসে তার চেম্বারে ঢুকে পড়ে এবং ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এসময় তারা চেম্বারের ভেতরে থাকা রোগীদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
ঘটনার পর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে এবং সন্দেহভাজনদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি পূর্বশত্রুতা বা পেশাগত কারণে ঘটে থাকতে পারে।
সাবেক ছাত্রের জড়িত থাকার অভিযোগ
নিহতের পরিবার ও সহকর্মীরা জানিয়েছেন, গিয়াস উদ্দিনের সাবেক এক ছাত্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তার বিরোধ চলছিল। নিহতের বড় ছেলে ব্যারিস্টার জিএমপি লব বলেন, “আমার বাবার একজন সাবেক ছাত্র দীর্ঘদিন ধরে হুমকি দিচ্ছিল। কয়েকবার প্রাণনাশের আশঙ্কাও ছিল। আমরা আইনি ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।” তিনি আরও জানান, “আমার বাবা একজন নিবেদিতপ্রাণ পল্লী চিকিৎসক ছিলেন। তার মতো একজন মানুষকে প্রকাশ্যে হত্যা করা অমানবিক।”
রাজনৈতিক ও পেশাগত প্রতিক্রিয়া
গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত খুনিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ পল্লী চিকিৎসক সমিতি এক বিবৃতিতে বলেন, “গিয়াস উদ্দিনের মতো অভিজ্ঞ ও সৎ চিকিৎসকের মৃত্যু শুধু তার পরিবারের নয়, পুরো চিকিৎসা সমাজের অপূরণীয় ক্ষতি। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
শেষকৃত্য ও পরবর্তী ব্যবস্থা
নিহতের জানাজা সোমবার (৫ আগস্ট) বাদ জোহর শ্রীপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
