হ-বাংলা নিউজ: -ইউসুফ সিকদার শামীম
সিডনি থেকে ডঃ ইউনুস চট্টগ্রাম নিবাসী প্রফেসর ডঃ আনিস চৌধুরীকে তাঁর সরকারে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ করেছেন। আওয়ামীলীগ সরকার পরিবর্তনের সাথে ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশনারের পরিবর্তন হয়েছে। সিডনিতে কনসাল জেনারেলের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে এবং হয়তো তারও পরিবর্তন ঘটবে। এসবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর দেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে হাইকমিশন/এ্যাম্বাসী/কনস্যুলেট ইত্যাদি কি-পয়েন্টগুলোতে দ্রুত পরিবর্তন করে সরকারের করনীয় বিশ্বের অন্যান্য দেশ এবং সেসব দেশের সরকারগুলোকে অবহিত করা প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু এর কোনোটি ঠিকমতো হয়েছে বলে দৃশ্যমান নয়। বরং, হাইকমিশন এবং কনস্যুলেট অফিস সেই পুরনো শকুনদের দখলে।
বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে সিডনির মিন্টোতে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগের যুগ্ম জেনারেল সেক্রেটারি আব্দুর খান রতনের বাসায় বাংলাদেশ থেকে আগত মন্ত্রী/এমপি/সচিবদের প্রমোদের ব্যবস্থা করা হতো। বিনিময়ে কথিত নেতা বাংলাদেশে প্লটসহ নানাবিধ সুবিধা নিয়েছে। এদের বিশেষ ভোজের আয়োজন করতেন অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শেখ শফিকের (নবাব রেস্টুরেন্ট শফিক) নবাব রেস্টুরেন্টে। সেসব বিগত সরকারের আমলের কথা। এখনও অনেকটা সেই নিয়মে চলছে।
আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান পালন উপলক্ষে সিডনিতে সন্ত্রাস করার পরিকল্পনাসভা ২২ জুন ২০২৫ মিন্টোর নবাব রেস্তোরাঁয় শফিক শেখের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভাশেষে তারা সবাই অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগের সভাপতি ডঃ সিরাজুল হকের বাসায় নৈশভোজে মিলিত হয়।সভায় সরাসরি উপস্থিত ছিলেন পাবনার এমপি সন্ত্রাসী প্রিন্স এবং এ্যাডভোকেট সান্জিদা খাতুন এমপি। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত (ডঃ আনিস চৌধুরীর সহায়তায়) আব্দুর খান রতন, লন্ডনে অবস্থানরত সাবেক মন্ত্রী স.ম রেজাউল, সাবেক চীপ হুইপ লিটন চৌধুরী প্রমুখ সিডনির লেকেম্বায় পরিকল্পনানুযায়ী ২৩ জুন ২০২৫ সন্ধ্যায় এখানে পালিয়ে আসা যুবমহিলালীগের একজন নেত্রীর পরিচালনায় প্রকাশ্যে একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এবং এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে মারধর করে। সিডনিতে বাংলাদেশ কমিউনিটিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
পতিত সরকারের সহযোগীদের মধ্যে বিশেষ করে আব্দুর খান রতনের হিউম্যান ট্রাফিকিং গ্রুপের সদস্য সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মাদজামান টিটু আর্থিক দেউলিয়াত্বের কারনে যার কাউন্সিলর পদ হারাতে হয় সেই দুর্বৃত্ত হাইকমিশন, কনসাল জেনারেলের অফিস এবং ডঃ আনিসকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব পালন করছেন।
অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগের যুগ্ম জেনারেল সেক্রেটারি আব্দুর খান রতন এবং আওয়ামীলীগের অন্যতম নেতা মোহাম্মাদ জামান টিটু হিউম্যান ট্রাফিকিং এর জন্য একটি বিজনেজ সংগঠন তৈরী করেছে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেজ ফোরাম। গত বছর এই সংগঠনের ব্যানারে সিডনিতে বিজনেজ এক্সপোর তারিখ নির্ধারণ করে স.ম রেজাউল, তৎকালীন কমার্স সেক্রেটারি, মন্ত্রী প্রমুখের প্রমোদ ভ্রমন এবং একই সাথে হিউম্যান ট্রাফিকিং করার জন্য অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে ২৫/৩০ লাখ টাকা নিয়েছে কিন্তু বিধি বাম! সরকারের পতন হওয়াতে সম্ভব হয়নি।
সরকার পতন হলেও এই চক্রের উদ্দেশ্য সাধনে কোনো অসুবিধা হচ্ছেনা। বিজনেজ এক্সপো ২০২৫ পূনরায় ১ এবং ২ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হবে বলে তারিখ নির্ধারিত হয়েছে এই কথিত ফোরাম প্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে যারা আসবে তাদের রেজিস্ট্রেশনের যে ফর্মে বলা আছে অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশন বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরা যৌথভাবে এই এক্সপো করছে। রেজিস্ট্রেশন ফিস বা প্রতিটি স্টলের বিপরীতে অতিরিক্ত লোকের অর্থ দিতে হবে আব্দুর খান রতনের ব্যাংক হিসাবে। আব্দুর খান রতন সভা করছে এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো সাথে, বিজিএমইএ, বিজেএমসি ইত্যাদি সংগঠনের নেতাদের সাথে। এই আওয়ামী লীগ নেতা কিন্তু মবের শিকার হচ্ছেন না!
অথচ ইপিবি বলছে আব্দুর খান রতনকে রেজিস্ট্রেশন ফিস দিলেও যদি ভিসা না হয় তার জন্য ইপিবি দায়ী থাকবেনা।
ইপিবির কি প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে? হাই কমিশনার বলছেন তারা আয়োজক নয়। ফর্মে লেখা আছে তারা আয়োজক তবে টাকা দিতে হবে হিউম্যান ট্রাফিকার এবং আওয়ামীলীগ নেতা রতনের ব্যাংক হিসাবে।
সবাই কি ডঃ ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত?
এটাচমেন্ট :
১। রেজিস্ট্রেশন ফর্ম
২। পোস্টার
৩। মারধর করার দৃশ্য
৪। এটাকের দৃশ্য
৫। মিছিল
