হ-বাংলা নিউজ: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট, যেখানে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ, ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ। শুনানি হয় ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের ওপর।
আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর নির্মম নির্যাতনে তিনি নিহত হন। ফেসবুকে ভারতবিরোধী একটি পোস্ট দেওয়ার পর তাকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। পরদিন সকালে তার মরদেহ হলের সিঁড়িতে পাওয়া যায়। বুয়েট মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে পরে নিশ্চিত করা হয় যে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার পরদিন আবরারের বাবা চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষ করে ৩৭ দিনের মাথায় চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর নিম্ন আদালত ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন: মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার অপু, মেহেদী হাসান শান্ত, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মাজেদুর রহমান মাজেদ, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তানভির, হোসেন মো. তোহা, শামীম বিল্লাহ, এএসএম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির জেমী, মিজানুর রহমান মিজান, এসএম মাহমুদ সেতু, সামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, পলাতক এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মোর্শেদ উজ্জামান জিসান ও মুজতবা রাফিদ।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা: অমিত সাহা, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, মো. আকাশ হোসেন, মুহতাসিম ফুয়াদ এবং মো. মোয়াজ আবু হোরায়রা।
২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি নিম্ন আদালতের রায় পর্যালোচনার জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা জেল ও ফৌজদারি আপিল করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২4 সালের ২৮ নভেম্বর শুনানি শুরু হয়। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর মামলাটি আরও গতি পায়।
আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ড দেশের শিক্ষা ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন তোলে। তার নামটি হয়ে ওঠে ছাত্র আন্দোলনের এক প্রতীক।
