শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ

হ-বাংলা নিউজ: স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শুরু হওয়া স্বাধীনতার লড়াইয়ের ৫৫ বছর পূর্তিতে জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেছে দেশমাতৃকার জন্য জীবন দেয়া শহিদদের। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে যারা ‘বাংলাদেশ’ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিলেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন আয়োজনে দিনটি পালন করা হয়।

বুধবার ছিল ৫৫তম মহান স্বাধীনতা দিবস এবং এটি ছিল গৌরবময় জাতীয় দিবস। সকাল থেকেই সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন। স্মৃতিসৌধের চারপাশ ফুলে ফুলে সেজে ওঠে, এবং অনেকেই লাল-সবুজের পোশাক পরিধান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বিভিন্ন সরকারি, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্বরা স্মৃতিসৌধে গিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সকাল ৬টা ১১ মিনিটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এরপর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী সম্মিলিতভাবে তাকে রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায়।

এরপর শ্রদ্ধা জানান বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ৬টা ১৫ মিনিটে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বক্তব্য রাখেন অন্যান্য ব্যক্তিরা। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আমরা জাতীয় স্বার্থের জন্য ঐকমত্যে পৌঁছাবো এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করব।”

এ সময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া মন্তব্য করেন, “যতক্ষণ না দেশের মানুষ স্বাধীন বোধ করবে, ততক্ষণ স্বাধীন ভূখণ্ডের কোনো মানে নেই। ’২৪ সালের মুক্তিযুদ্ধ সেই স্বাধীনতাকে রক্ষা করেছে।”

বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, এবং অন্যান্য নেতারা। তারা ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বিষয়টিকে অস্বীকার করে বলেন, “বাংলাদেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কিছু নেই, এটা ৭১-এর স্বাধীনতা দিবসের অবমাননা।”

এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বক্তব্য দেন। এসসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, এবং সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে, আর ৭১ এবং ২৪-এর মধ্যে পার্থক্য নেই, বরং এটি একে অপরকে শক্তিশালী করেছে।”

এসময় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, এবং মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *