মার্চের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৫ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২০ হাজার ২০৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। রোববার (১৬ মার্চ) এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

হ-বাংলা নিউজ:এছাড়া, চলতি মাস মার্চে নতুন রেকর্ড হতে পারে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে, যা অতীতে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়েছে, চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১৬৫ কোটি ৬১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২০ হাজার ২০৪ কোটি টাকার বেশি। প্রতিদিন গড়ে ১১ কোটি ডলার (১৩৪৭ কোটি টাকা) এসেছে। যদি এই প্রবাহ অব্যাহত থাকে, তবে মার্চ মাসে রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন ডলারের (৩০০ কোটি ডলার) মাইলফলক স্পর্শ করতে পারে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশের অর্থপাচার কমেছে এবং হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা সংকুচিত হয়েছে। এছাড়া, ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম খোলা বাজারের মতোই পাওয়া যাচ্ছে, যা প্রবাসীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করছে। ঈদুল ফিতরের প্রেক্ষিতে রেমিট্যান্সের প্রবাহ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসের প্রথম ১৫ দিনে ১৬৫ কোটি ৬১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৭ কোটি ১১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স, বিশেষায়িত দুটি ব্যাংক থেকে এসেছে ১৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স, বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে ১১৫ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

এদিকে, ৭টি ব্যাংক রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসরকারি ব্যাংক আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক, এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, এবং উরি ব্যাংক রয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার, যা গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের চেয়ে ৩৫৫ কোটি ডলার বেশি। গত ডিসেম্বর মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে শুরু করে টানা ৭ মাস ধরে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বর মাসে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবর মাসে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বর মাসে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

এবারের মার্চে আসা রেমিট্যান্সও অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে। করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যা এখন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *