হ-বাংলা নিউজ: বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘকে পরিস্থিতির ওপর গুরুত্ব দিতে এবং তথ্যানুসন্ধানী দল পাঠাতে আহ্বান জানান। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এই তথ্য জানিয়েছেন।
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের হার্ডটক অনুষ্ঠানে ভলকার তুর্ক এই মন্তব্য করেন। বুধবার এই অনুষ্ঠানের এক পর্ব বিবিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। সেখানে তিনি বিবিসির উপস্থাপক স্টিফেন সাকারকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতিসংঘকে মাঝে মাঝে ক্ষমতাহীন মনে হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “যেখানে এটি গুরুত্ব দিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তার একটি উদাহরণ হতে পারে গত বছরের বাংলাদেশ। আপনি জানেন, জুলাই-আগস্টে সেখানে ছাত্রদের ব্যাপক বিক্ষোভ হয়।”
বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন দমনে যে ব্যাপক নিপীড়ন চলছিল, তা উল্লেখ করে ভলকার তুর্ক আরও বলেন, “তাদের জন্য বড় আশার বিষয় ছিল আমাদের বক্তব্য, আমাদের পদক্ষেপ এবং আমরা কীভাবে সেই পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করি। আমরা প্রকৃতপক্ষে সেনাবাহিনীকে সতর্ক করি, যদি তারা এতে জড়িত হয়, তবে এর মানে হতে পারে যে তারা শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর সক্ষমতা হারাবে। এর ফলে পরিবর্তন আমরা দেখতে পাই।”
ভলকার তুর্ক বলেন, “অধ্যাপক ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন, তিনি আমাকে তাৎক্ষণিকভাবে বলেছিলেন, ‘আপনি কি একটি তথ্যানুসন্ধানী দল পাঠাতে পারেন এবং সেখানে যা ঘটেছে তা তদন্ত করতে সাহায্য করতে পারেন?’ আমরা তা করেছি এবং এটি কার্যকরভাবে সহায়তা করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি গত বছর বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। আমরা একটি অবস্থান নিয়েছিলাম, আমরা কথা বলেছিলাম এবং তাদের সহযোগিতা করেছিলাম। এতে ছাত্ররা আমাদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ ছিল।”
এছাড়া, ভলকার তুর্ক বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধের বিষয়ে বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের ওপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ওয়াশিংটন এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে, কারণ ইউএসএআইডি এবং বিদেশি সহায়তা আন্তর্জাতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সুদানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিরিয়া এবং পাশের দেশগুলোর সহিংসতায় শিকার মানুষদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গেও বলেন, “আমরা এই যুদ্ধ বন্ধ করতে নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
ফিলিস্তিনের গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “এটি একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি, এবং সেখানে যা ঘটছে তা নিয়ে সারা বিশ্ব উদ্বিগ্ন।”
