জুলাই বিপ্লবের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীরা পালিয়েছে, কিছু পুলিশ কর্মকর্তা এখনো চাকরিতে বহাল

হ-বাংলা নিউজ: জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পরিকল্পনাকারীদের অধিকাংশই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। ছাত্র-জনতার তীব্র প্রতিরোধের মুখে, ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারে ভারতে পালিয়ে যান। তবে, তখনো আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ মন্ত্রী-এমপি এবং পুলিশ কর্মকর্তারা দেশ ছাড়তে পারেননি, কিন্তু তারা পরে পালাতে সক্ষম হন। তবে কীভাবে তারা বৈধ পথে দেশ ছাড়তে পেরেছেন, তা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ ও প্রশ্ন রয়েছে।

এদিকে, ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলির ঘটনায় সরাসরি জড়িত অনেক পুলিশ কর্মকর্তা এখনো চাকরিতে বহাল। তাদের বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করে রাখা হয়েছে, এবং কয়েকজন ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়া, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসায় পুলিশ, র‌্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতিদিন বৈঠক অনুষ্ঠিত হতো, যেখানে আন্দোলন দমন করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হতো। তবে, এই কোর গ্রুপের প্রায় সবাই এখন দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যিনি হামলার প্রথম নির্দেশদাতা ছিলেন, কিছুটা বিলম্বে হলেও ভারতে পালিয়ে যান। ছাত্র-জনতা হত্যাকাণ্ডের মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সহ আরও অনেকে বর্তমানে ভারতে, যুক্তরাজ্যে এবং আমেরিকায় পালিয়ে আছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর সময় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, সাবেক সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, তার স্ত্রী অপু উকিল, কুমিল্লার সাবেক সংসদ সদস্য বাহার, রাজশাহীর সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনসহ আরও অনেকেই ভারতে পালিয়ে গেছেন।

এই সকল পলাতক নেতারা বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, যার একটি বৈঠক কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয় গত ১৫ জানুয়ারি। বৈঠকে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থির করতে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয় কয়েকজন নেতাকর্মীকে, তাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, অপু উকিল, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান, ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক যুগান্তরকে জানান, “আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে যে, দেশি-বিদেশি শক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *