হ-বাংলা নিউজ: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন বাংলাদেশের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার ওপর চালানো দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় আমরা অত্যন্ত খুশি। গুম, খুন, টর্চার সেল এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে ছাত্রদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল, তার সবকিছুই ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্ববাসী আবারো জানতে পারল যে, তারা কী ধরনের নির্মমতা চালিয়েছিল।”
তিনি এই মন্তব্যগুলো করেন বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান ‘ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিট’ (ডব্লিউজিএস) এর এক প্লেনারি সেশনে। সিএনএন এর উপস্থাপক বেকি অ্যান্ডারসন সেশনের সঞ্চালনা করেন।
ড. ইউনূস জানান, “অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর আমাদের প্রথম কাজ ছিল ভেঙে পড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং দ্বিতীয় কাজ ছিল বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলা। নতুন সমাজ নির্মাণ এবং জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি স্থাপন করা।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এ লক্ষ্যে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করে ১৫টি কমিশন গঠন করেছি। এখন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের আলোকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে, যাতে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি ঐকমত্য কমিশনও গঠন করা হয়েছে।”
রেকি অ্যান্ডারসনের এক প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরিত হলে আমি আবারো আমার মূল কাজগুলোতে ফিরে যাব।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “পুরোনো বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। তাই আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। এই পথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আমরা বিপুল সহায়তা পাচ্ছি।”
স্বৈরাচারী শাসনের সময় বাংলাদেশের অর্থনীতির ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস বলেন, “অর্থনীতি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে পঙ্গু হয়ে পড়েছিল। ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যাংক থেকে চুরি করে নিয়ে গেছে এবং প্রতিবছর ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৫-১৬ বছর বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়নি, শেখ হাসিনা দেশে ভুয়া নির্বাচন করেছিল।”
সামাজিক ব্যবসা বিষয়ে তিনি বলেন, “সামাজিক ব্যবসা হলো সমাজের সমস্যাগুলো সমাধান করার একটি উপায়। এর প্রধান উদ্দেশ্য মুনাফা করা নয়; বরং টাকার মাধ্যমে সমাজের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করা।”
