ভাঙার প্রকল্প থেকে সরে গিয়ে গড়ার প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান মাহফুজ আলমের

হ-বাংলা নিউজ: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, আমাদের এখন ভাঙার প্রকল্প থেকে সরে গিয়ে গড়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া উচিত। তিনি এ মন্তব্য করেন বুধবার রাত আড়াইটার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে।

মাহফুজ আলম বলেন, আমরা আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক আধিপত্যবাদ মোকাবিলা করছি, এবং এটি শুধুমাত্র কিছু মূর্তি বা দালান ভাঙার বিষয় নয়। মূর্তি না ভেঙে, আমাদের শত্রুদের শক্তির বিপরীতে পাল্টা চিন্তা, শক্তি ও হেজেমনি গড়ে তুলতে হবে। ভাঙার প্রকল্প থেকে সরে এসে আমাদের গড়ার প্রকল্প গ্রহণ করা উচিত, যাতে দেশ উন্নতির পথে এগিয়ে যায়।

তিনি বলেন, “লিগ” বা “হাসিনা” শুধুমাত্র আঞ্চলিক আধিপত্যবাদের এক্সটেনশন, যা হেজেমনি তৈরি করছে। তাদের বাস্তবধর্মী রাষ্ট্রকল্পনা, দেশে এবং ডায়াসপোরায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের পালটা হেজেমনি এই তিনটি বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত হবে।

গড়ার কাজে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “ভাঙার পর গড়ার সুযোগ এসেছে, কিন্তু অনন্তকাল ভাঙার প্রকল্প আমাদের জন্য ভালো ভবিষ্যতের ইঙ্গিত হতে পারে না। গড়ার প্রকল্পগুলো দ্রুত শুরু এবং বাস্তবায়ন করা উচিত।” তিনি সবাইকে গড়ার কাজে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি আরও জানান, “সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়ন শীঘ্রই শুরু হবে। আহত ও নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন এবং জুলাই গণহত্যার বিচারের কাজ চলমান রয়েছে এবং এ মাসেই এগুলো আরও দ্রুত হবে।”

মাহফুজ আলম বলেন, “ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ নিছক ভাঙা নয়, বরং বিকল্প গড়ারও লড়াই। নতুন বন্দোবস্তে আমরা ভাঙার চেয়ে গড়ার দিকে গুরুত্ব দিতে চাই।”

তিনি বলেন, “খুনি হাসিনার বক্তব্য প্রচার এবং এর প্রতিক্রিয়ায় সকল রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য দায়ী হবে আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ। আমাদের উচিত সৃজনশীল শক্তির বিকাশ ঘটানো এবং এই আধিপত্যবাদ মোকাবিলায় দূরদর্শী পদ্ধতি গ্রহণ করা, যাতে আমরা সঠিক পথ নিতে পারি।”

এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন, “এই লড়াই এখনও শুরু হয়েছে এবং এক দশক পর হয়তো তার মীমাংসা হবে। আমাদের প্রস্তুতি তেমন পর্যাপ্ত নয়। তবে, আমাদের সৃজনশীল শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আগামী দশকব্যাপী গণতান্ত্রিক ও আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াইয়ে জয়ী হতে হবে। ইতিহাস আমাদের সুযোগ দিয়েছে এবং আমাদের লক্ষ্য অবশ্যই জয় লাভ করা।”

তিনি বলেন, “জেতার উপায় একটাই – রাষ্ট্রকল্পনা, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং দক্ষ, মর্যাদাবান মানবসম্পদ গড়ে তোলা। আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করুন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *