হ-বাংলা নিউজ:
পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দেয়া এবং এর পরবর্তী সময়ে সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ যুক্ত গ্রাফিতি বাদ দিয়ে আদিবাসী জনগণের অধিকারকে উপেক্ষা করেছে। টিআইবি বলেছে, এনসিটিবিকে পুনর্গঠন করা উচিত যাতে এটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহি মূলক হয় এবং কর্তৃত্ববাদের প্রভাবমুক্ত হয়।
এছাড়া, সংস্থাটি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, বাংলাদেশে আদিবাসী জনগণের আদিবাসী পরিচয়ের স্বীকৃতি এবং তাদের সমঅধিকার নিশ্চিত করা উচিত। টিআইবি সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিকে সময়োপযোগী হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং আদিবাসীদের মর্যাদা এবং অধিকার সম্পর্কে সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এক স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর হুমকির পর পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে আদিবাসী জনগণের অধিকার প্রতিফলিত গ্রাফিতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এনসিটিবির এ পদক্ষেপকে টিআইবি কর্তৃত্ববাদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা হিসেবে দেখতে পাচ্ছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এনসিটিবি এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে কর্তৃত্ববাদের পতন হলেও এই সংস্থায় এর চর্চা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকার সচেতন হওয়ার পরও ‘আদিবাসী’ পরিচয় ব্যবহার নিষিদ্ধ করার অযৌক্তিক তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছে, যা আদিবাসী জনগণের অধিকার হরণের এক কৌশল হিসেবে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, সরকারের সম্প্রতি প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি সহিংসতা, জাতিগত বিদ্বেষ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের কথা বললেও, আদিবাসী শব্দটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পরিচয়ে ব্যবহার না করার বিষয়টি উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, যদি এটি সচেতনভাবেই করা হয়ে থাকে, তাহলে কর্তৃত্ববাদের প্রচেষ্টা এবং এর বয়ান প্রতিফলিত হয়। তিনি সরকারের কাছে আদিবাসী পরিচয়ের নিরপেক্ষ ব্যাখ্যা এবং আন্তর্জাতিক চর্চা অনুসরণ করার জন্য আহ্বান জানান।
অন্যদিকে, আদিবাসী পরিচয়ের বিরোধী অন্যান্য পক্ষের প্রতি একই আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তারা এই বিষয়ে যুক্তিসঙ্গত অবস্থান গ্রহণ করেন।
