রাষ্ট্রায়ত্ত বন্ধ শিল্প কারখানাগুলো বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করছে বিডা: চৌধুরী আশিক মাহমুদ

হ-বাংলা নিউজ:

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানিয়েছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত বন্ধ শিল্প কারখানাগুলো বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তর করার বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যে অবকাঠামো সাপোর্ট রয়েছে, এবং এসব খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি মঙ্গলবার ঢাকার পল্টন টাওয়ারে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত একটি সেমিনারে এ কথা বলেন।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ সেমিনারে বলেন, “দেশে ব্যবসায়ী মানেই যেন অপরাধী। সবাই শুষে খেতে চায়। অনিয়মের কারণে ব্যবসায়ীদের ৪০ শতাংশের মতো ব্যয় বাড়াতে হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক সেমিনারে সকল সরকারের চরিত্র একই, এবং বর্তমান সরকারের নীতি প্রয়োগে ব্যবসায়ীরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই প্রশাসক হাফিজুর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান এবং লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের সিইও মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী। সেমিনারে ব্যবসায়ীরা গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন। বিডা চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন, আগামী ৭-১০ এপ্রিল একটি বিনিয়োগ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করতে পারবেন।

বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, দেশে বিনিয়োগের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য “হিটম্যাপ” নামে একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা ২০টি প্রতিষ্ঠানের মতামত নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তিনি ভ্যাটের বিষয়টি নিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করার কথা জানান।

গ্যাস সরবরাহ নিয়ে মত প্রকাশ করে তিনি বলেন, শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ থাকা উচিত। মালেশিয়ার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সেখানে গ্যাসের ৭০ শতাংশই শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমরা আপাতত রাষ্ট্রায়ত্ত বন্ধ শিল্পকারখানাগুলো বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের কাছে ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করছি, কারণ এখানে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ রয়েছে।”

একে আজাদ গ্যাস সরবরাহ নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, “সিস্টেম লসের নামে ১০ শতাংশ চুরি বন্ধ করা গেলে নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না।” তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার যদি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি ও ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তা অর্থনীতি ও জনজীবনে কী প্রভাব ফেলবে, তা খতিয়ে না দেখেই সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।

আবুল কাশেম খান বলেন, নীতির ধারাবাহিকতার অভাব বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রধান প্রতিবন্ধকতা। তিনি নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের সিইও মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, নতুন বিনিয়োগ আনতে রোড শো করা হলেও, দেশের বর্তমান বিনিয়োগ পরিস্থিতি বুঝে দেখতে হবে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ না থাকলে নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ করা সম্ভব নয়।

এফবিসিসিআইর প্রশাসক হাফিজুর রহমান বলেন, “দেশে বিনিয়োগের পথ সুগম করতে কিছু সুবিধা দিতে হবে যাতে ব্যবসা করতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় না পড়েন।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিডার হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নাহিয়ান রহমান রচি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *