সামান্য অপরাধে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্তে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ক্ষোভ, বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি

হ-বাংলা নিউজ:

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, সামান্য অপরাধের জন্য ঢালাওভাবে সাময়িক বরখাস্ত শুরু করা হয়েছে। তারা বলেছেন, যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে চাকরিবিধি অনুসরণ করে বড় কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের আয়োজনে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘জনবান্ধব সিভিল সার্ভিস বিনির্মাণে করণীয়: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয়, যা পরিষদের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে সিভিল সার্ভিস ক্যাডার থেকে বহির্ভূত করার চিন্তা থেকে বিরত থাকতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনকে আহ্বান জানানো হয়। তারা বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্বভার নিয়ে সেটির অপব্যবহার করে সামান্য অপরাধের জন্য ঢালাওভাবে বরখাস্ত করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হবে। যদি বরখাস্তের এই ধারাটি চলতে থাকে, তবে চাকরির বিধি অনুসরণ করে বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বক্তারা আরও বলেন, “সিভিল সার্ভিস তথা জনপ্রশাসনে একটি ক্যাডারের আধিপত্য, কর্তৃত্ব ও প্রভুত্ব চলছে। নিজেদের মেধাবী দাবি করলেও তাদের ব্যর্থতা বিগত ৫৪ বছর ধরে দেশবাসী প্রত্যক্ষ করছে। সিঙ্গাপুর ও ভারতের সিভিল সার্ভিস প্রশাসনের সঙ্গে তুলনা করলেও সিঙ্গাপুরের অবস্থান বিশ্বের এক নম্বরে, অথচ বাংলাদেশের অবস্থান একশর নিচে। তাদের কারণেই দেশের জনগণ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”

এছাড়া, তারা দাবি করেন যে, “কার্যকর জনসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে পেশাভিত্তিক কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে। যদি এক মন্ত্রণালয়ে কোনো ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকে, তাহলে সার্ভিসে পেশাদারিত্ব মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে, ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া যাচ্ছে না।”

বক্তারা আরও বলেন, “জাতীয় উন্নয়নে ২৫ ক্যাডার সরকারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে, তবে তাদের কর্মকর্তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই বঞ্চনা দূর করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তাদের দাবি জানানো হয়েছে।”

পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, “জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন চূড়ান্ত সুপারিশ দেওয়ার আগে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হবে না। রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারুক, সেজন্য পরিষদের সব সদস্য সতর্ক থাকবেন।”

এছাড়া, ২৫ ক্যাডারের পক্ষ থেকে সরকারকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ইত্যাদি খাতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার কথা জানানো হয় এবং এই খাতে সহায়তা করার মাধ্যমে একটি মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ মো. আরিফ হোসেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ২৫টি ক্যাডারের অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সেক্রেটারি, সিনিয়র নেতারা, এবং বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *