শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ‘তাঁবেদার রাষ্ট্রে’ পরিণত করতে চেয়েছিলেন: গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প

হ-বাংলা নিউজ:

বিরোধী দলগুলোর নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবির প্রেক্ষিতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে রেল, নৌ এবং ইন্টারনেট সংযোগের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে একতরফা সংযোগ স্থাপন করে দেশটিকে ভারতের প্রভাবাধীন ‘তাঁবেদার রাষ্ট্র’ (পাপেট স্টেট) বানানোর চেষ্টা করেছিলেন।

শুক্রবার গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প একটি প্রতিবেদনে জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানে আখাউড়া-আগরতলা আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগ, খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন এবং মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের ইউনিট-২ প্রকল্প উদ্বোধন করেছিলেন। এসব প্রকল্প বাংলাদেশকে ভারতের একনিষ্ঠ সহযোগী রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য পরিকল্পিত হয়েছিল, যেমনটি রাশিয়া বেলারুশকে নিজেদের অধীনস্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা যখন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দল এবং পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মুখে ছিলেন, তখন ভারত বাংলাদেশকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে একটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঋণের ফাঁদে পরিণত করতে চেয়েছিল, যাতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্য এবং শেখ হাসিনার প্রশাসন লাভবান হতে পারে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের অনুদান এবং ঋণ প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ভারতের স্বার্থে উপযুক্তভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

এছাড়া, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন যে, দুই দেশের মধ্যে তিনটি নতুন বাস পরিষেবা এবং একাধিক রেল পরিষেবা চালু করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারটি নতুন অভিবাসন চেকপোস্টও খুলে দেয়া হয়েছে, এবং ২০২২ সালে কনটেইনার ও পার্সেল ট্রেন চালু করা হয়েছে।

গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশের সব ধরনের আন্তর্জাতিক অর্থ পরিশোধ ভারতীয় পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, যার ফলে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলো ভারতের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা সংকুচিত করতে পারে।

শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ

এছাড়া, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের সাথে জড়িত বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। এফবিআই জানায়, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তরিত হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), যারা ৭ বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত করছে।

বিশেষ করে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ নয়টি প্রকল্পের মাধ্যমে এই অর্থপাচার এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে হংকং ও কেম্যান দ্বীপপুঞ্জের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অর্থ স্থানান্তরের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এদিকে, দুদক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই ঘটনা অনেকাংশে সত্য এবং ভবিষ্যতে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *