ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফর এবং সেনানিবাসে গোপন বৈঠক

হ-বাংলা নিউজ:  গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকায় পা রাখেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি, এক সময়ের উত্তেজনাপূর্ণ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের মধ্যে তার এই সফর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং ভারতীয় মিডিয়ার প্রতিবেদনগুলো নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছিল, যার প্রেক্ষিতে তার সফরটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

বিক্রম মিশ্রির সফরের প্রথম দিকে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এবং প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে ঢাকার সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত একটি গোপন বৈঠক নিয়ে।

জনতার চোখে মিজানুর রহমানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত তিন মাসে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে তা ৫২ বছরের ইতিহাসে নজিরবিহীন। বিশেষ করে ৫ আগস্ট বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এবং ভারতীয় মিডিয়ার প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্ক উত্থিত হয়েছে। ভারত, যাকে বাংলাদেশের জনগণ বন্ধুরূপে জানে, তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষত ৫ আগস্টের পরে, ভারতীয় মিডিয়া কিছু ঘটনার ভিত্তিতে এমন ধরনের প্রতিবেদন করেছে যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছে।

ভারতীয় রাজনীতিবিদরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগ তুলে দেশটির ভাবমূর্তিতে কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছেন। এমনকি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পাঠানোর প্রস্তাবও এসেছে। তবে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জটিলতা সত্ত্বেও, পরবর্তীতে বিক্রম মিশ্রি ঢাকায় পা রাখেন, এক অত্যন্ত সংকটময় মুহূর্তে।

প্রথমে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুই পররাষ্ট্র সচিবের একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, এরপর পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা স্থায়ী ওই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনা হয়, যার মধ্যে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টিও উঠে আসে। তবে বৈঠকে তার ফেরানো বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, যা ঢাকা শহরে আলোচনার মূল বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। বৈঠক শেষে, দুই পররাষ্ট্র সচিব আলাদা আলাদা ব্রিফিং করেন।

এছাড়া, একান্ত বৈঠক শেষে, বিক্রম মিশ্রি সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ জানান। পরে, তিনি ঢাকার সেনানিবাসে একটি গোপন বৈঠকে মিলিত হন, যেখানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট হয়নি, তবে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।

বিক্রম মিশ্রির সফর শেষে, তিনি বাংলাদেশে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে একটি ইতিবাচক ধারণা নিয়ে ফিরেছেন, যা সম্পর্কের জটিলতা কাটাতে সহায়ক হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *