হ-বাংলা নিউজ:
বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে ৬ ডিসেম্বর এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৯০ সালের এই দিনে, দীর্ঘ ৯ বছরের রক্তাক্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসক হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদের পতন ঘটে। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সামরিক শাসনের মাধ্যমে তিনি গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা স্তব্ধ করেন। তবে জনগণের অদম্য সংগ্রামের ফলে এই দিনে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়।
স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি ১৯৮২ সালে এরশাদের ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে চূর্ণ হয়। স্বৈরশাসক এরশাদ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এবং জনগণের মৌলিক অধিকার ধ্বংস করেন।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বে এবং ছাত্র-জনতার দৃঢ় সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতন ঘটে। গণতন্ত্রের জন্য এটিই ছিল এক ঐতিহাসিক বিজয়।
### *গণতন্ত্রের লড়াই আজও চলমান*
১৯৯০ সালের এই গণতান্ত্রিক বিজয়ের পথ ধরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আরেকটি কালো অধ্যায়ের অবসান ঘটে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার মিলিত শক্তি একটি নির্ভীক প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়ার ওপর অমানবিক নির্যাতন, জেল-জুলুম এবং হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর নিপীড়ন চালানো হয়। জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করে সারা দেশকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনে জাতীয়তাবাদী শক্তি এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করে তোলা হয়।
তবে ছাত্র-জনতার অদম্য শক্তি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এই ফ্যাসিস্ট শাসনকে পরাজিত করে এবং গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন ঘটায়। এই বিজয় শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নয়, এটি দেশের গণমানুষের বিজয়।
### *শ্রদ্ধা, প্রার্থনা ও অঙ্গীকার*
৬ ডিসেম্বরের এই স্মরণীয় দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের। তাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের গণতন্ত্রের আলো দেখিয়েছে।
আজকের দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা করা উচিত, আমরা যেন গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকি। দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যই পরাজিত অপশক্তির পুনরুত্থান রোধ করতে পারে। আমাদের লক্ষ্য হবে একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা।
*আল্লাহ হাফেজ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।*
—
*লেখক পরিচিতি:*
ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম একজন বিশিষ্ট কলামিস্ট, সমাজসেবক এবং রাজনীতিবিদ। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
