হ-বাংলা নিউজ:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। সেই সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হন ঢালিউডের জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তাকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনদের মধ্যে সমালোচনা শুরু হলেও, তিনি এসবের পরোয়া না করে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ইসলামি সংস্কৃতি নিয়ে কোনো উদ্যোগ নিলে তাকে মৌলবাদী বা জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সম্পর্কিত করা হতো। তিনি আরও বলেন, অতীতে দেশটি পরিকল্পিতভাবে দুটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল।
ফারুকী বলেন, “বাংলাদেশ সবার, ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে আলাদা করা হবে না। গান, বাজনা এবং নাচকে সংস্কৃতির অংশ হিসেবে গণ্য করা হতো, কিন্তু ধর্মীয় সংস্কৃতির প্রতি অবহেলা ছিল।” তিনি উল্লেখ করেন, ইসলামি সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করার কারণে অনেকের বিরুদ্ধে মৌলবাদী বা জামায়াত-শিবির হওয়ার অভিযোগ উঠত। উদাহরণ হিসেবে তিনি ১৯৯৩ সালে ‘বিষাদসিন্ধু’ নাটক নির্মাণের জন্য সৈয়দ জামিল আহমেদের বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরের তকমা লাগানোর কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এবার আমরা এসবের বাইরে এসে, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব।”
ফারুকী আরও বলেন, “অপরাধীরা তাদের চিহ্ন মুছে ফেলতে চায়, কিন্তু গণহত্যার দায় থেকে তারা মুক্তি পাবে না। শহীদদের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য নিয়ে আর্কাইভ করা হবে, যাতে ৫০ বছর পরেও অপরাধীরা এর দায় থেকে মুক্তি না পায়।” তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন করে ২০২৪ সালে পুনর্নবীকরণের কথা বলেন এবং বলেন, “২০২৪ সালে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আরও শক্তিশালী হবে, তবে ফ্যাসিস্টদের বিচার বিঘ্নিত করার সুযোগ থাকবে না।”
এ সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়নি, যদিও পুলিশের উপস্থিতি ছিল না। তিনি মনে করেন, সঠিক সময় দেওয়া হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে। “ভুল হলে আমরা সেগুলো ঠিক করব,” বলেন তিনি।
