হ-বাংলা নিউজ:
বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক তকমা লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সম্মিলিত সনাতন পরিষদের নেতারা। তারা বলেছেন, বিভিন্ন অজুহাতে সনাতন সম্প্রদায়ের সদস্যদের সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে, নতুন সরকারি নিয়োগ ও সংস্কার কমিটিগুলোর মধ্যে তাদের কোনো প্রতিনিধিত্ব রাখা হচ্ছে না, এবং সনাতন ধর্মাবলম্বী সাংবাদিক ও সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তারা এর নিন্দা জানিয়েছেন।
শনিবার ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বিগত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) সম্পর্কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের প্রতিবাদে’ বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জেকে পাল, অধ্যাপক অশোক তরু, প্রধান সমন্বয়ক শ্যামল রায়, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ আচার্য, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায় প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন এবং তাদের বাড়ি-ঘর, মন্দির ও সম্পদ লুণ্ঠন, হত্যা, গুম, ধর্ষণ, ধর্মান্তরিত করার মতো অপকর্ম ঘটেছে। তবে, এসব ঘটনার একটিতেও সঠিক বিচার নিশ্চিত করা হয়নি।
লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, কিছু ব্যক্তি আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)-কে নিষিদ্ধ করার দাবি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। তিনি সরকারের কাছে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান এবং দ্রুত চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, “আমরা তীব্রভাবে দাবি করছি, ২০০১-২০২৪ সালের মধ্যে সনাতন সম্প্রদায়ের ওপর সংঘটিত অত্যাচার ও নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার করা হোক, মঠ-মন্দির এবং জমি দখলের মামলার সঠিক তদন্ত সম্পন্ন হোক, ৫ আগস্টের পর ঘটে যাওয়া সব অত্যাচারের সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।” তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসন, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। এছাড়া সম্প্রতি ঐক্যবদ্ধ সনাতন সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ঘোষিত ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সনাতন পরিষদের নেতারা জানান, তারা আগামী দিনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
