যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানাল

হ-বাংলা নিউজ: বাংলাদেশে ভিন্নমতাবলম্বী, বিরোধী এবং সাধারণ মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার রক্ষার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনে মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এ মন্তব্য করেন। তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই বিষয়টি তুলে ধরেন। সম্প্রতি ১৮৪ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে প্যাটেল বলেন, “আমরা সাংবাদিকদের অধিকার ও স্বাধীনতাকে যথাযথভাবে সম্মান করার আহ্বান জানাই।”

ভিন্নমত ও সাংবাদিকদের অধিকার

প্রেস ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক জানতে চান, ১০ নভেম্বর ঢাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক সমাবেশ করতে বাধা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে দেখছে এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা কী? সাংবাদিক আরও জানতে চান, এর আগে বাক-স্বাধীনতা ও সমাবেশের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলা সমর্থকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোন পদক্ষেপ রয়েছে?

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, “আমরা সব মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাই, যার মধ্যে ভিন্নমতাবলম্বী ও বিরোধী দলের লোকজনও অন্তর্ভুক্ত। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে, এসব স্বাধীনতা কোনো গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য উপাদান। আমরা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারসহ সব অংশীদারদের এই সমর্থন জানাই। সব বাংলাদেশির জন্য এসব স্বাধীনতা রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হয়।”

সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মুক্ত গণমাধ্যম

এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ১৮৪ জন সাংবাদিকের প্রেস ক্রেডেনশিয়াল বাতিল করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে?” তিনি আরও বলেন, “কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস ইতোমধ্যে ড. ইউনূসকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?”

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, “আমি সেই রিপোর্টটি দেখিনি, তবে যদি এটা সত্যি হয়, তবে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে, কোনো দেশের পরিস্থিতি কাভার করার জন্য স্বাধীন গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং পররাষ্ট্র সচিব ব্লিঙ্কেনও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন। আমরা সবসময় উৎসাহিত করব এবং নিশ্চিত করতে চাই যে, সকল সাংবাদিকের অধিকার ও স্বাধীনতা যথাযথভাবে সম্মানিত হয়।”

সংক্ষেপে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতন্ত্র, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে। তাদের মতে, এসব স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা এবং সুরক্ষিত থাকা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং তারা আশা করে যে, বাংলাদেশ এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *