যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটদান শুরু

হ-বাংলা নিউজ: মার্কিন জনগণের অপেক্ষার পালা শেষ হয়ে গেছে। মঙ্গলবার ভোটের মাধ্যমে তারা নিজেদের পছন্দের প্রেসিডেন্ট বেছে নেবেন। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিস উভয়েই এখন ইতিহাসের মুখোমুখি। ভোটের শেষ মুহূর্তে নিজেদের পক্ষে ভোট ব্যাংক টানতে তারা প্রচুর প্রচেষ্টা করেছেন।

রোববার, মিশিগানে এক সভায় কমলা হ্যারিস আশাবাদী মনোভাব প্রকাশ করে বলেন, যদি তিনি নির্বাচিত হন, তবে ফিলিস্তিনের যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘নতুন করে শুরু’ করার আহ্বান জানান। অপরদিকে, ট্রাম্প পেনসিলভেনিয়ায় এক সমাবেশে নির্বাচনের ভুয়া খবর নিয়ে সতর্ক করেন এবং বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা বিজয় ছিনিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।’

মঙ্গলবার বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে ভোটকেন্দ্র খুলবে। বিভিন্ন সময়জোনের কারণে ভোটগ্রহণের সময় ভিন্ন হতে পারে, তবে অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হবে ইস্টার্ন টাইম সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে। ভোট গণনা শুরু হবে এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল আসতে শুরু করবে।

এবারের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতার আভাস পাওয়া গেছে। ৬০ বছর বয়সী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা নারীদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সমর্থন পাচ্ছেন, আর ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প পুরুষ হিসপানিক ভোটারদের সমর্থন লাভ করছেন। সার্বিকভাবে, ট্রাম্প সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।

রয়টার্স/ইপসস জরিপে দেখা যাচ্ছে, উভয় প্রার্থী নিরঙ্কুশ সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছেন, তবে ভোটদানে ভাটা পড়েনি। এই শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট casting হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে ৭৮ মিলিয়নের বেশি আমেরিকান আগাম ভোট দিয়েছেন।

সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভাগ্য নির্ধারণ করে। রোববার, মিশিগানে কমলা হ্যারিস ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, এবারের নির্বাচন নতুন নেতৃত্বের সূচনা করবে। তিনি উল্লেখ করেন, ভোটের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা, ভয় এবং ঘৃণাকে রোধ করার একটি সুযোগ রয়েছে।

কমলা জানিয়েছেন, গাজা ও লেবাননে ইসরাইলি যুদ্ধের শিকার বেসামরিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিনি গাজার যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেন। ট্রাম্পও গাজা যুদ্ধ সমাপ্তির কথা বলেন, কিন্তু উভয়ের পক্ষ থেকেই বিস্তারিত রূপরেখা দেওয়া হয়নি।

কমলা হ্যারিস প্রথম দিন থেকেই জনগণের জীবনযাত্রার খরচ কমানোর অঙ্গীকার করেছেন। তার পরিকল্পনায় খাদ্য সামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ, বাড়ি কেনার সুবিধা, আবাসনের ব্যবস্থা এবং ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গর্ভপাতের অধিকারের প্রতিশ্রুতির কারণে নারীদের সমর্থন বেশি পাচ্ছেন তিনি।

অন্যদিকে, ট্রাম্প শনিবার তিনটি সমাবেশে অংশ নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভোট চুরির অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে তিনি দেশের জন্য মৌলিক পরিবর্তন আনবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন স্বর্ণযুগে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

ট্রাম্প দাবি করেন, ২০২০ সালে তার পরাজয় হয়েছিল জালিয়াতির কারণে, এবং নির্বাচন রাতেই ফলাফল ঘোষণা করার প্রয়োজনীয়তা জোর দেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে হারলে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *