বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে: একটি ক্রমবর্ধমান সামাজিক সমস্যা

হ-বাংলা নিউজ:  বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে একটি ক্রমবর্ধমান সামাজিক সমস্যা, যা নারীদের প্রতি বৈষম্যের একটি উৎস এবং ফলাফল উভয়ই। বাল্যবিয়ের প্রভাব রোধে তরুণ ও তরুণীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে বিভিন্ন সরকারি পরিকল্পনায় তরুণদের অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

বুধবার রাজধানীর একটি পত্রিকায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) আয়োজিত ‘বাল্যবিবাহ নিরসনে তরুণ ও তরুণীদের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব বিষয় তুলে ধরেন।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসরিয়াল ফেলো ড. এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ। তিনি বলেন, বিগত দশকের অর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং ২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন চালুর পরেও বাংলাদেশের বাল্যবিবাহ নিরসনের অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক নয়। নারী শিক্ষার ব্যাপক সম্প্রসারণ সত্ত্বেও, বাল্যবিবাহের হার নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে অবস্থান করছে।

তিনি আরও বলেন, বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে বৈষম্যমূলক সমাজের পরিবর্তন এবং সংস্কার প্রক্রিয়ায় তরুণ-তরুণীদের সম্পৃক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাল্যবিবাহকে একটি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা এবং শাস্তির বিধান বৃদ্ধি যথেষ্ট নয়; নতুন উদ্যোগ এবং চলমান প্রকল্পের কার্যকারিতা বাড়ানোরও প্রয়োজন রয়েছে।

ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন বলেন, “আইন ও অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু যদি একজন ব্যক্তিকে সুযোগ দেওয়া না হয়, তাহলে তিনি জীবনধারণের জন্য পথ খুঁজে পাবেন না। যদি আমরা মেয়েদের জন্য অধিকার সচেতনতা তৈরি করার পাশাপাশি তাদের সুযোগ করে দিতে পারি, তবে তারা শিক্ষা অর্জন করে বিভিন্ন পেশায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে।”

বাল্যবিবাহ নিরসনে তরুণদের ভূমিকা নিয়ে স্বর্ণকিশোরী প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা ফারজানা ব্রাউনিয়া বলেন, “বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে গিয়ে বিভিন্ন ঝুঁকি রয়েছে। সামাজিক সুরক্ষার অভাবই বাল্যবিয়ের অন্যতম কারণ।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তসলিমা ইয়াসমীন সভাটি সঞ্চালনা করেন এবং সমাপনী বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “বাল্যবিবাহ তরুণদের জন্য একটি হুমকি। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের মধ্যে বাল্যবিবাহ নিরসন এবং নারীদের অধিকার নিয়ে আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *