হ-বাংলা নিউজ: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানিয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন, বিশেষ করে যারা চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন, দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন এবং পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার জন্য চীন, নেপাল, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া থেকে ডাক্তারদের মেডিকেল টিম এনে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চীনের অ্যাডভান্স মেডিকেল টিম বাংলাদেশে এসেছে এবং তারা হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করে চিকিৎসার মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা পরবর্তীতে সেবা ও সাপোর্টের বিষয়ে Need Based Assessment-এর ভিত্তিতে অবহিত করবেন।
নূরজাহান বেগম আরও জানান, নেপাল থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে এসেছেন। আজ (৭ অক্টোবর) ফ্রান্সের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও ঢাকায় পৌঁছেছেন। যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে যুক্তরাজ্য থেকে অর্থোপেডিক ডাক্তার বাংলাদেশে আসবেন।
তিনি বলেন, নেপাল থেকে আগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১৯২ জন চক্ষু রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন এবং চারজন জটিল রোগীর অপারেশন সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া ইনজুরড রেটিনা রোগীদের রেটিনার অস্ত্রোপচার শেষে কর্ণিয়া অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে, এ বিষয়ে সেবা ফাউন্ডেশন সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
নূরজাহান বেগম বলেন, বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রদত্ত সেবা সঠিক বলেও মন্তব্য করেছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা এবং শহিদ পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন প্রক্রিয়া চলছে এবং আহত ও শহিদের পরিচিতিসহ একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে (৬ অক্টোবর পর্যন্ত) সারাদেশে শহিদের সংখ্যা ৭৩৭ জন এবং আহতের সংখ্যা ২২,৯০৭ জন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি সম্পর্কে নূরজাহান বেগম জানান, দেশের সব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্ণার স্থাপন করা হয়েছে এবং DNCC ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যদি সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হতে পারি, তাহলে ডেঙ্গুর প্রতিকার সম্ভব।
এছাড়া, দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু বিষয়ক ‘ফোকাল পারসন’ নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখা ডেঙ্গু ট্র্যাকার অ্যাপলিকেশন তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে পরীক্ষার ফলাফল সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ. টি. এম. সাইফুল ইসলাম এবং অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
