হ-বাংলা নিউজ: ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিমমওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম (রহ) একজন ক্ষণজন্মা মহা মনীষী। বিশ শতকের বাংলাদেশে যে কয়জন প্রাতঃস্মরণীয় ইসলামী ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব ঘটে তাদের শীর্ষে ছিলেন মওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রহীম। আজকের এ দিনেই ( ১ অক্টোবর ১৯৮৭) মহান এ মানুষটি চলে যান রফিকে আ‘লার ডাকে।
১৯৭৭ সালে মক্কায় অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্ব ইসলামী শিক্ষা সম্মেলন ও রাবেতা আলমে ইসলামীর সম্মেলন এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
এছাড়াও ১৯৭৮ সালে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত প্রথম দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ইসলামী দাওয়াত সম্মেলন ও একই বছর করাচিতে অনুষ্ঠিত প্রথম এশিয় ইসলামী মহাসম্মেলনে ছিলেন বাংলাদেশর প্রতিনিধি।
১৯৮০ সালে কলম্বোতে অনুষ্ঠিত আন্তঃপার্লামেন্টারি সম্মেলন এবং ১৯৮২ সালে তেহরানে অনুষ্ঠিত শীআদের ইসলামী বিপ্লবের তৃতীয় বার্ষিক উৎসবেও উপস্থিত ছিলেন তিনি।
তিনি এত আত্মপ্রচার বিমুখ ছিলেন যে তিনি নামের আগে মওলানা উপাধিটা ব্যবহারেও কুণ্ঠা বোধ করতেন।
অথচ মওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রহীমের হাদিছ চর্চা তথা ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের সাথে সাথে আধুনিক শিক্ষার সাথে ইসলামী শিক্ষার বাংলাভাষায় রচিত কোনো কোনো গ্রন্থ পড়ে বুঝবেন এমন যোগ্যতাহীনরাও নামের আগে দেদারসে আল্লামা উপাধি ব্যবহারে এতটুকু কুণ্ঠা বোধ করেন না। তিনি ছিলেন একাধারে প্রখ্যাত আলিম, বিজ্ঞ ফকীহ, ইসলামী চিন্তাবিদ, সুলেখক, বাগ্মী সুসাহিত্যিক, অন্যদিকে পার্লামেন্টারিয়ান, রাজনীতিবিদ ও অর্থনীতিবিদ।
শুধু মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত একজন ব্যক্তির মাঝে এতগুলো জ্ঞানের সমাহার সত্যিই এক আশ্চার্যের বিষয়। তিনি শুধু পিরোজপুরের আলিম ছিলেন না, ভারতীয় উপমহাদেশের সমকালীন যুগে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
মাওলানা আবদুর রহীম পিরোজপুরের শিয়ালকাঠিতে ১৯১৮ সালের ২ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আলহাজ্ব খবির উদ্দীন। নিজ এলাকায় প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে তৃষ্ণিত অন্তরকে তৃপ্ত করতে তিনি কলিকাতায় চলে যান। ১৯৪২ সনে তিনি এ মাদরাসা হতে কৃতিত্বের সাথে মমতাজুল মুহাদ্দেসীন ডিগ্রী লাভ করেন।
স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে তিনি বরিশালের নাজিরপুর ও কেউন্দিয়া কাউখালী মাদ্রাসায় প্রধান মাওলানা হিসেবে চার বছর শিক্ষাদানে ব্যাপৃত থাকেন। কিন্তু বাঁধাধরা চাকরি তার পছন্দ হয় নি বলে তিনি আর চাকরি করেননি।
বাংলাদেশের আলিমদের মাঝে যে বিষয়টির অভাব পরিলক্ষিত হয়ে আসছিল তাহলো তাদের লিখিত কোনো অবদান তেমন একটা নেই। এ বিষয়টিই হয়তো তিনি উপলব্ধি করেছিলেন এবং কলিকাতায় অধ্যয়নকালেই গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। তার ক্ষুদ্রতর জীবনের শতাধিক গ্রন্থ অনুবাদ ও রচনা তার এ গবেষণারই বাস্তব ফসল।
তিনি ছিলেন একজন ইসলামী অর্থনীতিবিদ। বস্তুতপক্ষে তার আগে কোনো আলেম দ্বীন ইসলামের অর্থনৈতিক দর্শনকে বাংলা ভাষায় এত ব্যাপকভাবে তুলে ধরতে পারেননি। ইসলামী অর্থনীতি সম্পর্কে তাদের বাস্তব কোনো ধারণাই ছিল না। বরং অনেকেই একে পার্থিব চিন্তা বা জড়বাদী দর্শন বলে উপেক্ষা করেছেন।
তিনি বাংলা ভাষায় সুদের কুফল ও যাকাতের অর্থনৈতিক তাৎপর্য, পুঁজিবাদ ও সমাজবাদী অর্থনীতির মোকাবেলায় ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবহারের শ্রেষ্ঠত্ব যুক্তিতর্কের মাধ্যমে প্রমাণ করে আধুনিক শিক্ষার শিক্ষিতের এক বিরাট অংশকে ইসলামী আদর্শের প্রতি আকৃষ্ট করেছেন-অনুপ্রাণিত করেছেন। শুধু তাই নয় এ সম্পর্কে তিনি বেশ কয়েকটা বইও রচনা করেন। ইসলামী অর্থনীতির উপর তাঁর আরবীতে রচিত আল-ইকতিসাদ আল-ইসলামী পুস্তিকাটি তাঁর ইসলামী অর্থনীতি ও আরবী বিষয়ে পাণ্ডিত্যর বড় প্রমাণ।
তিনি ছিলেন একজন বাগ্মী সুবক্তা। তার ভাষা ছিল যেমনি সুন্দর তেমনি আকর্ষণীয়। সাধারণ জনসভার চেয়ে সুধী
…
