হ-বাংলা নিউজ:রাজধানী ঢাকায় স্মরণকালের সবচেয়ে বড় গণসমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ২:৩০টায় নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ঢাকা জেলা, এবং আশপাশের সকল জেলা ও মহানগর থেকে নেতাকর্মীরা এতে যোগ দেবেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নেতাদের দাবি, এই সমাবেশ থেকে তারেক রহমান নতুন বার্তা দেবেন।
এদিন সিলেট, খুলনা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রংপুর, ফরিদপুর, কুমিল্লা এবং রাজশাহী মহানগরে বিএনপি শোভাযাত্রার আয়োজন করবে। এই শোভাযাত্রাগুলিতে নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র নেতারা।
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে রাজধানী ঢাকায় গণসমাবেশ এবং ঢাকার বাইরে অন্য মহানগরগুলোতে শোভাযাত্রা করার পরিকল্পনা ছিল বিএনপির। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে কর্মসূচি একদিন পিছিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশে তারেক রহমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম, জাতীয় নির্বাচন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য দলের ৩১ দফা, দেশের স্থিতিশীলতা, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য এবং আন্দোলনের নানা দিক নিয়ে বক্তব্য দেবেন।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যুগান্তরকে জানান, “গত ১৭ বছর ধরে আমরা এক বা অন্যভাবে রাজনৈতিক দমন-নিপীড়নের শিকার ছিলাম। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ঢাকায় শান্তিপূর্ণভাবে গণসমাবেশের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই সমাবেশ সফল করার জন্য প্রস্তুত।”
তিনি আরও জানান, সমাবেশের প্রধান আকর্ষণ তারেক রহমানের বক্তব্য। গণতন্ত্রকামী মানুষ তার বক্তৃতা শোনার জন্য নয়াপল্টনে জমায়েত হবে।
ঢাকা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী জেলা এবং নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীরা এই সমাবেশে অংশ নেবেন। আগের মতো কোনো বাধা না থাকায় নেতাকর্মীরা আশ্বস্ত এবং নির্বিঘ্নে সমাবেশে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, “আমরা সুশৃঙ্খলভাবে ও ঐক্যবদ্ধভাবে গণসমাবেশে অংশ নেব। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বার্তা শোনার আগ্রহে নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে আসবেন।”
তিনি উল্লেখ করেন, “তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে। তার নির্দেশনায় আন্দোলনে ৪২২ জন নেতাকর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন, যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা।”
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, সমাবেশ পরিচালনা করবেন দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।
ঢাকার বাইরে ৯ মহানগরে শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্যরা। সিলেটের শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন মির্জা আব্বাস, খুলনায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে সালাউদ্দিন আহমেদ, বরিশালে বেগম সেলিমা রহমান, রংপুরে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ বীর বিক্রম। ফরিদপুরে বিএনপি ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, কুমিল্লায় মো. শাজাহান এবং রাজশাহীতে শামসুজ্জামান দুদু শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু যুগান্তরকে বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা ১৭ বছর ধরে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করেছি। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। এখন আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে হবে। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা মাঠে আছি এবং থাকব।”
