হ-বাংলা নিউজ:বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাসের কর্মকাণ্ডের প্রাথমিক মূল্যায়ন করেছে এবং সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে আইন ও বিচার বিভাগে সরকারের নেয়া কিছু পদক্ষেপে দলটি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
তবে নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার শুরু না হওয়া এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ (রূপরেখা) প্রকাশ না হওয়ায় দলটি উদ্বিগ্ন। এছাড়া প্রশাসনের উচ্চ পদে কিছু উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে বিএনপির সন্দেহ রয়েছে। তারা মনে করে, পূর্ববর্তী সরকারের সহায়ক ও আশীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হচ্ছে।
গতকাল সোমবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির সভায় এই মূল্যায়ন উঠে আসে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যোগ দেন এবং সভার সভাপতিত্ব করেন।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, সরকার গত এক মাসে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তারা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতি সরকারের অগ্রাধিকার দেখা যাচ্ছে না। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার গত সাড়ে ১৫ বছরে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ধ্বংসযজ্ঞ করেছে, তার পুনর্গঠনে সরকারের উদ্যোগের অভাব দেখা যাচ্ছে। বরং ব্যক্তিকেন্দ্রিক সংস্কার বেশি হচ্ছে।
সভায় উপস্থিত সূত্র জানায়, বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের পরবর্তী কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করবে এবং আন্দোলনের প্রস্তুতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে, ৮ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিয়ে তারেক রহমান ঘোষণা করেছেন যে, জনগণের ভোটাধিকার এবং সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তারেক রহমানের এই বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির নেতারা একমত পোষণ করেছেন।
সভায় রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফার পক্ষে জনমত গড়ে তোলার জন্য শিগগিরই কর্মসূচি শুরু করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মাঠে সক্রিয় থাকার পরিকল্পনাও রয়েছে। এ লক্ষ্যে নিয়মিত বৈঠক চলমান।
ঢাকায় ১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আয়োজন এবং ১৪ সেপ্টেম্বর গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এই কর্মসূচি সফল করতে ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বড় জমায়েতের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভায় ঢাকার বাইরে সফরের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো চিঠি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়েছে এবং রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
