চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটের আয়োজনে এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রা হচ্ছে না। তবে চারুকলাকে ছাড়া মূল ক্যাম্পাসে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান হবে।শুক্রবার রাত ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকাদার। তিনি বলেন, যেহেতু চারুকলা ইনস্টিটিউট সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য আপাতত বন্ধ রয়েছে, তাই এবার পয়লা বৈশাখে চারুকলাকেন্দ্রিক কোনো আয়োজন থাকবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে বৈশাখের অনুষ্ঠান হবে।গত বছরের ২ নভেম্বর শ্রেণিকক্ষের পলেস্তারা খসে পড়ার পর ২২ দাবিতে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তাঁরা মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের মধ্যে গত ২ ফেব্রুয়ারি ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। তিন ধাপে এ বন্ধ ঈদ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনামতে বন্ধ চলাকালে শিক্ষার্থীদের কেউ ইনস্টিটিউটের ভেতরে অবস্থান করতে পারবেন না।চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের দায়িত্ব থাকে সাধারণত ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের। তাঁরা ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের থেকে চাঁদা নিয়ে, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা বাতিলের এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। স্নাতকোত্তরে শিক্ষার্থী জহির রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পয়লা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে শোভাযাত্রার আয়োজন করে, তা দায়সারা। মঙ্গল শোভাযাত্রার কোনো আমেজ সেখানে থাকে না। চারুকলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের মূল সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে। নানান আয়োজনে দিনটিকে মুখর করে রাখে। এ সময় আয়োজন না হওয়ার ঘোষণা দেওয়া দুঃখজনক। এর নিন্দা জানাচ্ছি।’উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালে। ২০১০ সালের আগস্টে চট্টগ্রামের সরকারি চারুকলা কলেজ ও এই বিভাগ এক হয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউট নামে পরিচয় লাভ করে। ইনস্টিটিউটের বর্তমান অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে নগরের মেহেদীবাগ এলাকায় বাদশা মিঞা সড়কে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে নববর্ষ উদ্যাপন করে আসছেন। করোনার সময়ে ২০২০ ও ২০২১ সালে এ আয়োজন স্থগিত ছিল।
