কানাডায় বিদেশিদের বাড়ি কেনায় কেন নিষেধাজ্ঞা

কানাডায় ঘরবাড়ির দাম বেড়েছে। তাই বিদেশি ব্যক্তি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের বাড়ি কেনায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। তবে সরকারের এ উদ্যোগ কানাডায় বাড়ির দাম কমার পক্ষে সহায়ক হবে কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিদেশিদের বাড়ি কেনায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ১ জানুয়ারি থেকে নতুন একটি আইন কার্যকর করেছে কানাডা। এতে বলা হয়েছে, আগামী দুই বছরের জন্য ‘কানাডীয় নন, এমন যেকোনো ব্যক্তির বাড়ি কেনা নিষিদ্ধ’। কানাডায় যাঁরা স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়েছেন কিংবা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা অবশ্য এ আইনের আওতায় পড়বেন না। অর্থাৎ তাঁরা বাড়ি কিনতে পারবেন। নতুন এ আইন লঙ্ঘন করে কেউ বাড়ি কিনলে তাঁকে জরিমানার মুখে পড়তে হবে। ‘অনুৎপাদনশীল বিদেশি মালিকানা’ ঠেকাতে কানাডার সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে।এ নিয়ে কানাডার আবাসনমন্ত্রী আহমেদ হুসেন গত মাসে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আইনটি কার্যকর করে আমরা এটা নিশ্চিত করতে চাই, কানাডীয়রা বাড়ির মালিক হচ্ছেন, কানাডায় যাঁরা বসবাস করছেন, তারা সুবিধা পাচ্ছেন।’

কানাডার বড় বড় শহরে আবাসন ব্যয় বেড়েছে। এ খরচ কমাতে গত বছরের জুনে আইনটি পাস করেছিলেন কানাডার আইনপ্রণেতারা। এরপর ১ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর করা হয়।কানাডায় কয়েক বছর ধরেই বাড়ির দাম বাড়ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের বছরগুলোতে দাম আরও বেড়ে যায়। কারণ, এ সময় ঋণে সুদের হার কমেছে এবং একই সঙ্গে মানুষের নিট আয়ও বেড়েছে। আবার বাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসাভাড়াও বেড়েছে। এতে শহরে যাঁরা বসবাস করেন, বাসাভাড়া তাঁদের অনেকেরই সাধ্যের বাইরে চলে যায়।কানাডায় কয়েক বছর ধরেই বাড়ির দাম বাড়ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের বছরগুলোতে দাম আরও বেড়ে যায়। কারণ, এ সময় ঋণে সুদের হার কমেছে এবং একই সঙ্গে মানুষের নিট আয়ও বেড়েছে। আবার বাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসাভাড়াও বেড়েছে। এতে শহরে যাঁরা বসবাস করেন, বাসাভাড়া তাঁদের অনেকেরই সাধ্যের বাইরে চলে যায়।কথা হয় ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সেন্টার ফর আরবান ইকোনমিকস অ্যান্ড রিয়েল স্টেটের পরিচালক থমাস ডেভিডঅফের সঙ্গে। তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, কানাডার সবচেয়ে বড় দুটি শহর টরন্টো ও ভ্যাঙ্কুভার। এ দুটি শহরে এমনিতেই বাড়ির দাম বেশি। এই দুই শহরে নতুন আইন খুব কমই কাজে আসবে। আবার কানাডায় বিদেশিদের বাড়ি কেনা ঠেকাতে ইতিমধ্যেই অঙ্গরাজ্যে কর বাড়ানো হয়েছে।ডেভিডঅফের মতে, যেসব শহরে বিদেশিদের বাড়ি কিংবা অ্যাপার্টমেন্ট কেনায় এখনো আলাদা কর আরোপ করা হয়নি, সেসব শহরে আইনটি প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, আবাসন খাতে বিদেশি বিনিয়োগ খারাপ কিছু নয়। কিন্তু একটি বাড়ি কেনার পর সেটি ফাঁকা পড়ে থাকলে বা মাঝেমধ্যে ব্যবহৃত হলে কিংবা শুধু ছুটির সময় ব্যবহৃত হলে সেটা তো সমস্যার।

ডেভিডঅফ আরও বলেন, ‘বিদেশি কেউ কানাডায় বাড়ি কিনে না থাকলে ভাড়া দিলে তো সমস্যা নেই। আমার ধারণা, এ আইনের মধ্য দিয়ে আবাসন খাতের সম্পদের ব্যবহার নিশ্চিত করার বদলে ওই সম্পদের মালিক কোন দেশের, সেটার ওপর বেশি নজর দেওয়া হয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *