ইউরোপে চিংড়ি রপ্তানিতে অগ্রগতি নেই

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফইএ) সূত্র জানায়, বাংলাদেশের হিমায়িত চিংড়ির ৮৫ শতাংশ রপ্তানি হয় ইউরোপে। এছাড়া বাকি ১৫ শতাংশ চিংড়ি আমেরিকাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে যায়। দেশে করোনা ভাইরাসের ঢেউ শুরু হলে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আর্থিক মন্দার কবলে পড়ে দেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্যের এই খাত।করোনা ভাইরাসের আঘাত কেটে যাওয়ার পর আবার আশার আলো দেখা দেয় হিমায়িত চিংড়ি খাতে। কিন্তু এই আশাও হতাশায় রূপ নেয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ দুটি দেশে চিংড়ি রপ্তানি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ইউরোপের বাকি দেশগুলোতে যে চিংড়ি রপ্তানি হচ্ছে, তার পরিমাণও অনেক কম। ফলে চিংড়ি রপ্তানিকারকেরা তীব্র হতাশায় ভুগছেন।সূত্র জানায়, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ইউরোপের বাজারে মাত্র সাড়ে ১৬ হাজার মেট্রিকটন চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে, যা থেকে আয় হয়েছে ১ হাজার ৮৬৬ কোটি ২৮ লাখ ৮৬ হাজার ৪৯৬ টাকা। এর আগে করোনা মহামারির মধ্যে ২০২১ সালে ২৫ হাজার ৫৪৪ মেট্রিকটন চিংড়ি রপ্তানি হয়, যা থেকে আয় হয় ২ হাজার ৫০ কোটি ৭৬ লাখ ৬৩ হাজার ৪৫৬ টাকা। এর আগের বছর ২০২০ সালে ইউরোপে চিংড়ি রপ্তানি হয় ২২ হাজার ৯১ মেট্রিকটন। এ বছর চিংড়ি রপ্তানি করে আয় হয় ২ হাজার ৬০০ কোটি ৩৬ লাখ ৭৬ হাজার ৫১৫ টাকা।সূত্রমতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক ও সুইডেনে চিংড়ি রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু এই রপ্তানির পরিমাণ খুবই কম। এর আগে করোনাকালীন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও ইউরোপের উক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের চিংড়ি রপ্তানির পরিমাণ বেশি ছিল। মত্স্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগ সূত্র জানায়, খুলনা অঞ্চল থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে হিমায়িত চিংড়ির সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে রাশিয়ায় ৭৩১ মেট্রিকটন ও ইউক্রেনে ১১৯ মেট্রিকটন চিংড়ি রপ্তানি হয়েছিল, যেখান থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছিল ৬৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি হয় ২৬৯ মেট্রিকটন  চিংড়ি, যা থেকে আয় হয় ২৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে এ দুটি দেশে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়।

বিএফএফইএর সহসভাপতি এস হুমায়ুন কবীর বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে চিংড়ির বাজার বাড়াতে হলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে। তা না হলে বর্তমানে যে পরিমাণ চিংড়ি রপ্তানি হচ্ছে, তা-ও সংকুচিত হয়ে পড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *