বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, একটি রাষ্ট্র টিকে থাকে তার জনগণের ঐক্যের ওপর, জনগণের নির্বাচিত সরকারের কার্যক্রমের ওপর, দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার ওপর। তবে যখন কোনো রাজনৈতিক দল মনে করে, তারাই দেশের মালিক, তখনই এমন সংকট তৈরি হয়। অতীতে যখনই দেশে গণতান্ত্রিক সংকট দেখা দিয়েছে, তখনই রাষ্ট্রকাঠামোকে মেরামত করে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশের চলমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বিএনপি ১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচি এবং রাষ্ট্রকাঠামোকে মেরামত করার জন্য ২৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা হবে।
আজ শনিবার বিকেলে সিলেট নগরের কুমাড়পাড়া এলাকার একটি সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন। বিএনপির চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচি এবং ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে’ ২৭ দফা নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি।বিএনপিই আওয়ামী লীগকে দেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল দাবি করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, রাষ্ট্রকাঠামোকে মেরামতের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে। কিন্তু বিএনপি কখনো গণতন্ত্রকে হত্যা করেনি, বরং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছে। মৃতপ্রায় আওয়ামী লীগকে দেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু এখন বিরোধী দলমতের মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেন না। এই সরকার শুধু গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেনি, মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়, প্রচারণায় বাধা দেওয়া হয়; ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, একজনের ভোট আরেকজন দিয়েছেন। গণতন্ত্রের বাহন নির্বাচনকে ধ্বংস করে দিয়ে দেশে গণতন্ত্র আছে বলা যায় না।
সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখন দুর্নীতি দমন না করে, ‘বিএনপি দমন কমিশন’ হিসেবে নিয়োজিত হয়েছে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এটি এখন দলীয় লোক নিয়োগ দেওয়ার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের জন্য ২৭ দফা দেওয়া হয়েছে। এই সংকট থেকে দেশকে বাঁচাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্থায়ী মুক্তিসহ দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সবার অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এ সময় তিনি একটি নির্দলীয় নিরেপক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ ও সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান।জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মিফতাহ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির ও এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ুম জালালি, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।
