হ-বাংলা নিউজ:
বিশেষ প্রতিনিধি, ৮ই মে, ২০২৫: মুক্তধারা ফাউণ্ডেশনের সভাপতির পদ থেকে ডঃ নুরুন নবী পদত্যাগ করেছেন। ২০২৫ সালের বইমেলা পর্যন্ত তাঁরই সভাপতিত্বে এই ফাউণ্ডেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছিল। ২০২৫ এর মুক্তধারা নিউইয়র্ক বইমেলার আহ্বায়ক সাংবাদিক রোকেয়া হায়দার।
০৫ই আগস্ট ২০২৫ একটি ঘৃণ্য পরিকল্পনার মাধ্যমে ম্যাটিকিউলিয়াস ডিজাইন প্ল্যানে বাংলাদেশের বর্তমান দখলদার মুহাম্মদ ইউনুসের রাষ্ট্রক্ষমতায় বসার পর থেকেই মুক্তধারা ফাউণ্ডেশনে একটি চরম স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল।
জাতির পিতাকে অবমাননা, ৩২ নম্বর পুড়িয়ে দিয়ে নগ্ন উল্লাস,সাম্প্রদায়িক আক্রমণ,খুন,ধর্ষণ, মব চক্রের মাধ্যমে পরিকল্পিতগণহত্যা ইত্যাদিকে সমর্থন করে আসছিলেন মুক্তধারা ফাউণ্ডেশনের একটি চক্র! এর প্রতিবাদে ডঃ নুরুন নবী ছিলেন সবসময়ই সোচ্চার।
একাত্তরের পরাজিত শক্তির ছত্রছায়ায় এই ফাউণ্ডেশনের একটি পক্ষের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা যেকোনো ভাবেই এবারের বইমেলা দখলের জন্য ছিল বিশেষভাবে তৎপর। শেষ পর্যন্ত তাদের হাতেই বন্দি হতে চলেছে ৩৪ বছর ধরে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী বইমেলা।
এবারের বইমেলায় অবৈধ ইউনুস সরকারের পদলেহিদের দ্বারা অনুষ্ঠানমালা তৈরি হওয়ার প্রতিবাদে, নিউইয়র্কের সাংস্কৃতিক মোর্চা ‘একাত্তরের প্রহরী’ একটি সভা আহ্বান করে। সেই সভায় নিউইয়র্কের লেখক-সাংবাদিক- আবৃত্তিশিল্পী-মুক্তিযোদ্ধা-সাংস্কৃতিক কর্মী-নাট্যজন-পেশাজীবি-সংগঠকসহ একটি বড় সংখ্যক অভিবাসীদের সাথে মত বিনিময়ে মিলিত হন ডঃ নুরুন নবী। তিনি সেখানে এক বিবৃতিতে বলেন, মুক্তধারা বইমেলার ঐক্য ধরে রাখার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমাদের দাবি ছিল একটাই, বইমেলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমুন্নত রেখে এগিয়ে যাবে। যা এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই চলে আসছে। কিন্তু খুবই পরিতাপের বিষয়, মুক্তধারা গ্রন্থবিতানের মালিক ও তার কিছু অনুসারী দখলদার ইউনুস সরকারের প্রতি নগ্ন আনুগত্য স্বীকার করে এই চেতনা ও মূল্যবোধকে বিসর্জন দিয়েছেন। একই সাথে বইমেলার নামে জঙ্গিবাদ-মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িক শক্তির পৃষ্ঠপোষক অবৈধ ইউনুস সরকারের রাষ্ট্রীয় অন্যান্য সাহায্য পাওয়ার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। পাশাপাশি একাত্তরের চেতনাবিরোধীদের হাতে বইমেলাকে ‘নয়া-বন্দোবস্ত’ দিয়েছেন।
ডঃ নবী বলেন, বাংলাদেশের আজকের পরিস্থিতি আমাদের কারোই অজানা নয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে দখলের দিকে ঠেলে দিয়েছে এই অবৈধ সরকার। সেন্টমার্টিন ইস্যু, আরাকান করিডোর, চট্টগ্রাম বন্দর অবৈধ ও গোপনে লীজ দেয়ার অনেক কিছুই এগিয়ে এনেছে এই দখলদার চক্র। এই সময়ে অবৈধ সরকার, শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতিকে অধিগ্রহণ করতে মরিয়ে হয়ে আছে। নিউইয়র্ক বইমেলা নতজানু নীতি নিয়ে তাদের পদযুগলেই সমর্পিত হয়েেছে।
উল্লেখ্য, মুক্তধারা আয়োজিত ২০২৫ এর ৩৪তম বইমেলায় ৪০ বছর বয়সি একজন তরুণ লেখক সাদাত হোসাইনকে আনা হচ্ছে উদ্বোধক হিসেবে। সাদাত হোসাইন সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী লেখকদের প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় চিহ্নিত। তিনি ৭.৬২ মার্কা জুলাই সন্ত্রাসের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন। রাজপথে মাইক হাতে নেমে দখলদার ইউনুসের গভীর ষড়যন্ত্রকে সমর্থন করেছিলেন। আগস্ট থেকে এই অবৈধ সরকারের দোসর হিসেবে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। এই বইমেলার ধারাবাহিক ঐতিহ্যের সাথে চরম বরখেলাপ ঘটিয়ে একজন অখ্যাত সাম্প্রদায়িক তরুণের হাতে উদ্বোধনের দায়িত্ব দেয়াকেও ম্যাটিকিউলিয়াস ডিজাইনের অংশ বলছেন কেউ কেউ।
সভায় বিস্তারিত আলোচনার পরে, সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ২৪ ও ২৫ মে ২০২৫ উইকেন্ডে নিউইয়র্কে ‘বঙ্গবন্ধু বইমেলা’ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। বিভিন্ন সেক্টর বন্টন করে নির্ধারিত ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেয়া হয়। সভায় যোগ দেয়া বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সমস্বরে বলেন, মুক্তধারা গ্রন্থবিতানের মালিক ও একাত্তরের চেতনা বিরোধী সহযোগীদের কার্যক্রম খুবই ঘৃণ্য বিষয়। এরা একাত্তরের তিরিশ লাখ শহীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেই এগোতে চাইছে। তাদের মূল চেহারা বেরিয়ে পড়েছে ০৫ই আগস্টের পরে। সর্বসম্মতিক্রমে ডঃ নুরুন নবী কে ‘বঙ্গবন্ধু বইমেলা- ২০২৫’ এর আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটি অভিবাসী সমাজের বিভিন্ন স্তরে ক্রমাগতভাবে মতবিনিময় অব্যাহত রাখবে। মেমোরিয়াল ডে উইকেন্ডে ‘বঙ্গবন্ধু বইমেলা’; সফল করার জন্যে সকলের প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানিয়েছেন আহ্বায়ক ডঃ নুরুন নবী।
