এটিএম আজহারের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে শুনানিতে ‘বিচার ছিল সাজানো’, দাবি আইনজীবীর

হ-বাংলা নিউজ: নবনির্মিত সংবাদ প্রতিবেদনটি নিচে দেওয়া হলো:

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানিতে তার পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার ছিল পূর্ব পরিকল্পিত ও প্রহসনের মতো। তিনি দাবি করেন, জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, যা ‘বিচারের নামে অবিচার’। সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার আত্মজীবনী ব্রোকেন ড্রিম বইয়ে এই অভিযোগের উল্লেখ রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

শিশির মনির শুনানিতে আরও বলেন, “যদি সময় না পেতাম, তবে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার এটিএম আজহারের ফাঁসি কার্যকর করে ফেলত। আল্লাহ ও সময় তাকে রক্ষা করেছেন। অন্যায়ভাবে ফাঁসি হলে আমরা আজ আদালতের মুখোমুখি দাঁড়াতে পারতাম না।” তিনি আদালতের কাছে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

শুনানির সময় তিনি অভিযোগ তোলেন, জামায়াত নেতাদের বিচারকে ঘিরে আমান আযমী, ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম, এবং হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে গুম করে ‘আয়নাঘরে’ রাখা হয়েছিল।

আবেগঘন এই শুনানিকালে আদালত কক্ষে নীরবতা বিরাজ করছিল।

বৃহস্পতিবার (৮ মে), প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চে শিশির মনির তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট রায়হান উদ্দিন ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, ড. হেলাল উদ্দিনসহ দলটির অন্যান্য নেতারা।

এর আগে, গত ৬ মে মামলার প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানির ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির অনুমতি দেয় সর্বোচ্চ আদালত ২৬ ফেব্রুয়ারি। একই সঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।

এই মামলাই প্রথম, যেখানে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের রিভিউ থেকে মূল আপিল শুনানির অনুমতি দেয় আপিল বিভাগ।

রিভিউ আবেদনের প্রথম দিনের শুনানি শেষ হয় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি। এর আগেই, ২৩ জানুয়ারি, আপিল বিভাগের চার বিচারপতির একটি বেঞ্চ শুনানির জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছিল। বেঞ্চের একজন বিচারপতির অনুপস্থিতিতে তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়।

২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর আপিল বিভাগ এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি রিভিউ আবেদন করেন। মূলত, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *