হ-বাংলা নিউজ: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের খসড়া প্রস্তাবে আয়কর ক্যাডারের মতামত প্রতিফলিত হয়নি— এমন অভিযোগ তুলে খসড়া অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন। একইসঙ্গে এনবিআর বিলুপ্তির সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ ও পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি। তার আগে শনিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত জরুরি সাধারণ সভায় আয়কর ক্যাডারের প্রায় ৫০ জন কর্মকর্তা খসড়া অধ্যাদেশ নিয়ে মতামত দেন। সভায় বিসিএস (কাস্টমস) অ্যাসোসিয়েশনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
এনবিআর বিলুপ্তির বিরোধিতা
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সঙ্গে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের যৌথভাবে কাজ করার যে ঐকমত্য ছিল, তা খসড়ায় উপেক্ষিত হয়েছে। খসড়ায় এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের জন্য নির্দিষ্ট সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এতে রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা ও কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছে অ্যাসোসিয়েশন।
তারা আরও উল্লেখ করে, বিদ্যমান রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী সরকারের বিভাগীয় দপ্তরগুলো এনফোর্সমেন্ট কাজ করতে পারে না। অথচ রাজস্ব ব্যবস্থাপনার বড় অংশই এনফোর্সমেন্ট নির্ভর। এনবিআর বিলুপ্ত হলে এই কাজের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো অনুপস্থিত থাকবে, যা বিশৃঙ্খলা ও অনিশ্চয়তা তৈরি করবে।
কাঠামোগত অসঙ্গতি ও দ্রুততা নিয়ে প্রশ্ন
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খসড়া অধ্যাদেশে ‘কর আইন প্রয়োগ ও কর আহরণ পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ’ রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে যুক্ত করায় নীতি বিভাগের ওপর ব্যবস্থাপনা বিভাগের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত নিয়ন্ত্রণ সৃষ্টি হয়েছে— যা সাংবিধানিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। আরও বলা হয়, খসড়ার ধারা ৯-এ জনবল নিয়োগে একটি সুপারিশ কমিটির উল্লেখ থাকলেও ধারা ৪(৪)-এ সেই কমিটির কোনো উল্লেখ নেই— যা আইনি অসঙ্গতি তৈরি করেছে।
৫ দফা দাবি
বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেছে:
- খসড়া অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
- এনবিআর বিলুপ্তির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অংশীজনদের মতামত গ্রহণ করতে হবে।
- রাজস্ব ব্যবস্থায় প্রভাব পর্যালোচনায় বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে হবে।
- জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিশন বা কমিটি গঠন করতে হবে, যাতে অর্থনীতিবিদ, আইনবিদ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, রাজস্ব বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
- একমাত্র কমিশনের সুপারিশ ও আয়কর-কাস্টমস বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
রাজস্ব সংস্কারের জন্য বৃহত্তর উদ্যোগের আহ্বান
অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, রাজস্ব সংস্কারকে শুধুমাত্র বিভাজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে টেকসই রাজস্ব নীতি, আইন সংশোধন, আধুনিক ব্যবস্থাপনা, অটোমেশন ও এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকর সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।
আপনি কি চান এই প্রতিবেদনটি সংক্ষিপ্ত করে ইংরেজি ভাষায়ও উপস্থাপন করা হোক?
